সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট। ভ্যানে চেপে এক বৃদ্ধকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে এলেন দুই যুবক। লাইনে দাঁড়ানো ভোটার, সংবাদকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর সেই ভ্যানের দিকে। চাদর মুড়িয়ে ভ্যানের ওপর এক বৃদ্ধকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁর নাম আব্দুল কুদ্দুস। বয়স ৭৫ ছুঁই ছুঁই। বার্ধক্যে শরীরটা দমে গেছে ঠিকই, কিন্তু ভোট উৎসবে শামিল হওয়ার ইচ্ছাটা ঠিক আগের মতোই রয়েছে তাঁর। বিপত্তি ঘটল তখনই, যখন কুদ্দুস সরকার ভোট দিতে না পেয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে বাড়িতে ফিরে গেলেন।
গতকাল রোববার ধামইরহাট উপজেলার হরিতকীডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। আব্দুল কুদ্দুস সরকারের বাড়ি নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বেনীদুয়ার গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, নিজের ইচ্ছে থেকেই প্রতিবেশী দুই যুবককে সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন কুদ্দুস। তবে ভোট না দিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কারণ প্যারালাইজ এর কারণে হাতের আঙুলগুলো বাঁকা হওয়ায় ইভিএমে ছাপ দিতে পারেননি কুদ্দুস। ভোট না দিয়েই বাড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁকে।
ভোটকেন্দ্রে ভ্যানের ওপর শুয়ে আব্দুল কুদ্দুস সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ সকালে ভ্যানে করে ভোটকেন্দ্রে এসেছিলাম। দায়িত্বরতরা আঙুলের ছাপ নেওয়ার জন্য চেষ্টা করল কিন্তু আমার আঙুল সোজা হচ্ছে না, তাই ভোট দিতে পারিনি। ব্যালট পেপারে হলে ভোট দিতে পারতাম।’
এ বিষয়ে হরিতকীডাঙা কেন্দ্রের পুরুষ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, আব্দুল কুদ্দুসের হাতের নখ সবগুলো বাঁকা। ফলে অনেক চেষ্টার পরও কোনোভাবেই তাঁর একটি আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এ জন্য তাঁর ভোটগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
ধামইরহাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ইভিএমে শারীরিক সমস্যার কারণে ভোট দিতে না পারার বিষয়টি
খোঁজ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।