চৌগাছা সদরের বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও চুরি হয়েছে। গত বুধবার রাতে বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে চোরেরা একটি স্টিলের আলমারি ও একটি বাইসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তুহিন উদ্দিন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয় ‘গত ১ মার্চ রাতে বিদ্যালয়ের ফটক ও কার্যালয়ের তালা ভেঙে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দুটি ডিনার সেট, একটি পানি গরম করা হিটার, দুটি সেলাই রেঞ্জ, একটি প্লাস, তিনটি তোয়ালে, একটি পিতলের ঘণ্টা, তিনটি এনার্জি বাল্ব ও একটি সাউন্ড বক্স নিয়ে যায়। এই চুরির বিষয়ে গত ২ মার্চ চৌগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এরপর গত ৯ মার্চ (বুধবার) রাতে আবারও তালা ভেঙে একটি স্টিলের আলমারি ও একটি বাইসাইকেল কে বা কারা নিয়ে গেছে। লিখিত আবেদনে বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
আবেদনের অনুলিপি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, চৌগাছা প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ক্লাবে দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিন উদ্দিন বলেন, ‘আগের চুরির বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। উনারা বলেছেন, আগে যেহেতু একটা অভিযোগ দিয়েছিলেন, নতুন করে অভিযোগ দেওয়ার দরকার নেই। আগেরটার ভিত্তিতেই আমরা দেখছি।’
প্রধান শিক্ষক তুহিন উদ্দিন বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিন উদ্দিন বলেন, ‘১ মার্চ চুরির ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। তখনো পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে এসেছিল। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, এটা পুলিশ প্রশাসনের বিষয়। তাঁরা দেখবেন।’
তুহিন উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়দের সহায়তায় ২০২০ সালে চৌগাছা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়া গ্রামে বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়। আমরা শিক্ষকেরা নিজেদের অর্থায়নে সেখানে আধা পাকা টিনশেড ভবন নির্মাণ করে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা দিয়ে আসছি। এখনো বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়নি। অথচ মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে বিদ্যালয়টিতে দুইবার চুরি হলো, যাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানের কাজে ব্যবহৃত প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি চুরি গেছে।’
প্রধান শিক্ষক তুহিন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি বুঝতে পারছি না। বিদ্যালয়টি শুরুর সময়ে থেকে এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ হয়নি। অথচ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও চোরেরা নিয়ে গেছে। এ জন্য বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান লিখিত আবেদন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘চুরির বিষয়টি আইনশৃঙ্খলার বিষয়। এটা পুলিশ প্রশাসন দেখবে।’
চৌগাছা থানাও উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’