ঘরে ঢুকে চুরি শেষে রান্না ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে পালাচ্ছিলেন মো. আব্দুল্লাহ (২৭)। কিন্তু কপাল খারাপ। বাড়ির মালিক টের পেয়ে ভেন্টিলেটরে আটকা চোরের পা ধরে শুরু করে দেন টানাটানি। আত্মরক্ষায় আব্দুল্লাহ তাঁর হাতে থাকা বটি দিয়ে বাড়ির মালিককে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। গৃহকর্তা পাল্টা আঘাত করেন। একপর্যায়ে দুজনই গুরুতর জখম হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে।
পরে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে চুরি করতে আসা মো. আব্দুল্লাহকে (২৭) আটকে রাখেন এবং বাড়ির মালিক শাহাদুল ইসলামকে (৩৪) উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ এসে আহত অবস্থায় দুজনকেই কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তাঁদের শরীরে একাধিক স্থানে জখমের ক্ষত রয়েছে। বর্তমানে তাঁরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত শাহাদুল ইসলাম উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে এবং শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আর চোর আব্দুল্লাহ একই ইউনিয়নের যদুবয়রা গ্রামের হাফেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক চুরির মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সরেজমিন স্কুলশিক্ষক শাহাদুলের ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা ভিড় জমিয়েছেন। পাকা ভবন নির্মাণ হলেও দরজা, জানালা ও সাজসজ্জাকরণের কাজ শেষ হয়নি। ভবনের ভেতরের রান্নাঘর, দরজা ও বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ লেগে রয়েছে।
পুলিশ, শিক্ষকের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার মধ্যরাতে রান্নাঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে চোর আব্দুল্লাহ ঘরে প্রবেশ করেন। আর কয়েকজন অজ্ঞাতনামা চোর বাইরে অপেক্ষা করেন। এরপর ঘরের টিনের বাক্সে থাকা নগদ ৯৫ হাজার টাকা ও প্রায় ৪ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির পর মোটরসাইকেল চুরির চেষ্টা চালান। রাত ২টার দিকে স্কুলশিক্ষক শাহাদুল টের পেয়ে চোরকে ধরতে যান। এ সময় চোর রান্নাঘরের ভেন্টিলেটরে মাথা ঢুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষক চোরের দুই পা ধরে টানাটানি করে।
বাড়ির মালিক স্কুলশিক্ষক শাহাদুল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, ‘রাত ২টার দিকে ঘুম ভেঙে দেখি একজন চোর মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ সময় চিৎকার করে উঠলে চোর ভেন্টিলেটরে মাথা ঢুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে চোরের পা ধরে টানাটানি করলে বটি দিয়ে কোপাতে শুরু করেন। ধস্তাধস্তিতে চোরের গায়ে কোপ লাগে।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘ধস্তাধস্তিতে চোর ও বাড়ির মালিক আহত হয়েছেন।’