ডুমুরিয়ায় সালতা নদীর তীরে এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর উদ্যোগে গড়ে উঠেছে শুঁটকির প্রকল্প। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে উৎপাদিত এখানকার শুঁটকি মাছ ভারত ও মালয়েশিয়ার বাজারে সুনাম কুড়াচ্ছে। তাই শুঁটকি উৎপাদনে ধুম পড়েছে এই প্রকল্পে।
জানা যায় ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের টিয়াবুনিয়া এলাকায় গত দুই মাস আগে গড়ে উঠেছে মেসার্স নূর ভাই ভাই ফিস ট্রেডিং নামের একটি শুঁটকির প্রকল্প। সালতা নদীর তীরে বাঁশের মাচাং তৈরি করে বিশাল চাতালে প্রতিদিন একটনেরও বেশি মাছ শুকানো হচ্ছে এখানে। এ কর্মযজ্ঞে অর্ধশত নারী-পুরুষ শ্রমিক প্রতিদিন সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের বেশিরভাগের বাড়ি খুলনার কয়রা এলাকায়।
প্রতিদিন সূর্যের প্রখর তাপে শুকানো হচ্ছে সাগর থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন প্রজাতির এই মাছ। কাঁচা মাছ ১০মিনিট লবন পানিতে ভিজিয়ে রৌদ্রে শুকানো হয়; যাতে মাছগুলোকে পোকা মাকড়ে নষ্ট না করতে পারে। এখানে ফাইস্যা, লইট্টা, চ্যাপা, রূপচাঁদা, শৈল, হাঙ্গর, ইলিশ, ভোলা ও দেশি পুঁটিসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি প্রজাতির মাছ শুকানো হয়।
তবে বিদেশের বাজারে হাঙ্গর বা কামোট মাছের চাহিদাও রয়েছে বেশ। এ প্রসঙ্গে শুঁটকি পল্লির ম্যানেজার রিপন দাস জানান, ‘নিয়মিত সূর্যের তাপ পেলে ৩ থেকে ৪দিনের মধ্যেই কাঁচা মাছ শুকিয়ে শুঁটকিতে পরিণত হয়। আমাদের শুঁটকি দেশের বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।’
এ বিষয়ে নূর ভাই ভাই ফিস ট্রেডিংয়ের মালিক প্রবাসি মোঃ নূর ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়ি খুলনার নতুন বাজার এলাকায়। আমি দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত মালয়েশিয়ায় থেকে শুঁটকি মাছের ব্যবসা করেছি। সেখানে এখনো আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে বন্ধ আছে। তাই দেশে এসে আমি শুঁটকির ব্যবসা শুরু করেছি।
এখানে দুই একর জায়গা হারিতে (বন্ধক) নিয়ে আমি বাঁশের খুঁটি এবং চালা তৈরি করে মাটি থেকে ৫/৭ ফুট উঁচুতে চাতাল করেছি। আমার এ প্রজেক্টে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শুঁটকি উৎপাদন করা হচ্ছে। শুধুমাত্র লবন পানি ছাড়া কোন ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। তিনি বলেন, আমি বিদেশে এ ব্যবসায় সফলতা পেয়েছি। যে কারণে আমি সরাসরি বিদেশের বাজারে ভারত ও মালশিয়ায় রপ্তানি করতে পারছি।
স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মাছ প্রস্তুত করায় বিদেশে এর চাহিদা বেড়েছে। তবে বৈধ কাগজপত্রের বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘ব্যবসা সবেমাত্র শুরু করেছি। তাই পেপারসগুলো হাতে পেতে কিছু তো সময় লাগবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই পেয়ে যাব।’