সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার শিমুলদাইড় বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে বিপাকে পড়েছে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে দরপত্র এ ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। দোতলা ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে আগে থেকেই থাকা টিনশেড ঘর ভেঙে ফেলে জায়গা খালি করা হয়। কিন্তু এর পর থেকেই উধাও হন ঠিকাদার। নতুন ভবন না হওয়ায় এখন শামিয়ানা দিয়ে তৈরি ঘরে বসে পড়ালেখা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয় মাঠের পূর্ব পাশে ৭২ হাত দীর্ঘ ও ১৮ হাত প্রস্থ বিশিষ্ট প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। এর চারপাশ ঘেরাও করা হয়েছে কাপড় দিয়ে। রোদ-বৃষ্টি ঠেকাতে ওপরে ব্যবহার করা হয়েছে ত্রিপল। সেখানে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও এসএসসি ব্যাচের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হচ্ছে। প্রচণ্ড তাপ দাহে শিক্ষার্থীরা ছটফট করছে। পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে কষ্ট হচ্ছে তাদের।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, এই গরমে শামিয়ানার নিচে পড়াশোনা করা খুবই কষ্টকর। তার ওপর একদিনের বৃষ্টিতে ওপরের ত্রিপল ছিদ্র হয়ে গেছে। ক্লাসের সময়ে বৃষ্টি হলে পড়ালেখা আর সম্ভব হবে না। সবকিছু ভিজে যাবে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়টির জন্য একটি দোতলা ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়। যথারীতি দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়। ঠিকাদারের পরামর্শে কাজের সুবিধার্থে বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে থাকা টিন শেডের শ্রেণি কক্ষগুলো ভেঙে জায়গা খালি করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ঠিকাদার উধাও হন। ফোনও রিসিভ করেন না তিনি। এদিকে, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। পরে গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বিদ্যালয় মাঠের পূর্ব পাশে ত্রিপল আর শামিয়ানা দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। করোনাকালীন দীর্ঘ ছুটির পর এখন শামিয়ানার নিচেই পড়াশোনা করছে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়েছি। ৫০ হাজার টাকা হলে নতুন ত্রিপল কিনে ছাউনি করে দিতে পারব। যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের আর রোদে পুড়ে কষ্ট করে ক্লাস করতে না হয়। কিন্তু এই টাকাই আমি জোগাড় করতে পারছি না। যদি কেউ বা কোনো সংগঠন আমার বিদ্যালয়ের দিকে একটু সুনজর দিত তাহলে চির কৃতজ্ঞ থাকতাম। শিক্ষার্থীরাও একটু স্বস্তি পেত।’
আব্দুল লতিফ আরও জানান, বিদ্যালয়ে সর্বমোট ১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী ছিল। কষ্ট করে ক্লাস করার কারণে দিন দিন কমছে শিক্ষার্থী সংখ্যা।
এদিকে, ভবন নির্মাণকাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে সাইফুল ইসলাম নামে ওই ঠিকাদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।