বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ভুলে পূর্ব সুজনকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন ভেঙে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবন ভাঙার এক বছরেও নতুন পাকা ভবন না হওয়ায় একটি টিনশেড কক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার শিশুদের শিক্ষা বিস্তরে ১৯২৯ সালে উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের পূর্ব সুজনকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এই এলাকার প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় এটি। বিদ্যালয়ের দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেড ঘর রয়েছে। এর পাশেই ছিল দুই কক্ষের একটি ছাদ ঢালাই করা ভবন। কিন্তু এই ভবনটি নতুন আরেকটি ভবন বানানোর জন্য ভেঙে ফেলে এলজিইডি। অথচ পরে জানা যায় অন্য একটি বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবনের টেন্ডার হয়েছিল। ভুল করে এ বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিরাট চন্দ্র ভদ্র বলেন, বিদ্যালয়টিতে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৩৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ক্লাস রুমের সংকটে একটি নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করে উপজেলা এলজিইডি অফিস। সে জন্য পুরোনো দুই কামরার ছাদ ঢালাই দেওয়া ভবনটি ভেঙে ফেলা হয় গত বছর।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শাহ আলম বলেন, এক বছর আগে ভবনটি ভেঙে ফেলায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটি টিনশেড ঘরে শ্রেণিকক্ষ, অন্যটিতে শিক্ষকদের রুম।
স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ তালুকদার বলেন, ‘এলজিইডি অফিস থেকে নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য পুরোনো ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। আমরা শুনছি এলজিইডি অফিস ভুল করে এই বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙেছে।’
৮ নম্বর পূর্ব সুজনকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামিম তালুকদার, আল রাফি, মেহেরিমা মালিহা ও মো. আলামিন হোসেন জানায়, করোনার কারণে অনেক দিন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। বিদ্যালয় খোলার পর দেখি আমাদের একটি ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাই আমাদের বাধ্য হয়ে একটি কক্ষে ক্লাস করতে হচ্ছে। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য অনুরোধ করছি।’
গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘নতুন ভবনের জন্য যে টেন্ডার আহ্বান করেছিল এলজিইডি অফিস, তা এই বিদ্যালয়ের জন্য নয়। ভুল করে এলজিইডি অফিস বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটি ভেঙে ফেলে। আমি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার ভবন ভাঙার বিষয়টি বলা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত ব্যবস্থাই নেয়নি কর্তৃপক্ষ।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, ‘আমি এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে বলেছি। তাঁরা বলেছেন এর সমাধান দ্রুত করা হবে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শিবলু কর্মকার বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’