Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

খেজুর, ছোলা ও চিনির আমদানি প্রচুর, তবু দাম লাগামহীন

ফারুক মেহেদী, ঢাকা ও আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম

খেজুর, ছোলা ও চিনির আমদানি প্রচুর, তবু দাম লাগামহীন

রমজানের চাহিদা সামনে রেখে গত তিন মাসে দেশে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা ও খেজুরের পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে। আমদানিকারকেরাও বলেছেন, রমজানে পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না, দামও বাড়বে না; কিন্তু তাঁদের এ কথার প্রতিফলন নেই বাজারে। বরাবরের মতো এবারও রোজা শুরুর আগেই বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অতিমুনাফালোভী চক্র। বাড়তে শুরু করেছে চিনি, ছোলা, খেজুরসহ প্রায় সব কটি নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম।

দেশে বছরে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন। স্বাভাবিক সময়ে মাসে চাহিদা থাকে দেড় লাখ টন। আর রমজানে চাহিদা ৩ লাখ টন। চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে (২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) দেশে চিনি আমদানি হয়েছে ১৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৩০ টন। আর রোজা ঘিরে শেষ তিন মাসে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৬০২ টন। এর বাইরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে আরও প্রচুর পরিমাণে চিনি। তারপরও বাজারে বেড়ে চলেছে পণ্যটির দাম।

আর কদিন পরই পবিত্র রমজান মাস। বাজারে এরই মধ্যে চাহিদা বেড়েছে খেজুরের। এতে পাইকারি-খুচরা সব বাজারে বেড়েছে পণ্যটির দাম। সম্প্রতি রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেটের সামনে

রাজধানীর কয়েকটি বাজার সরেজমিনে দেখা যায়, এক সপ্তাহে চিনির দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারিতে প্রতি কেজি চিনি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় পাওয়া গেলেও মিরপুর-১ ও মিরপুর-৬ নম্বরে বাজারে বেশ কয়েকটি দোকানে খুচরায় দেড় শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। যদিও এক মাস আগে প্রতি কেজি ১৩৫-১৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমদানি, মজুত ও সরবরাহে কোনো সংকট না থাকলেও সম্প্রতি এস আলম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের চিনির গুদামে আগুন লাগার পর অতিমুনাফালোভী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আগুন লাগার দুদিনের মাথায় খাতুনগঞ্জে মণপ্রতি চিনির দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এক দিন আগে যেখানে প্রতি মণ চিনির মূল্য ছিল ৪ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার ৯৫০, সেখানে গত বুধবার প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৫০ টাকায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে পাওয়া তিন মাসের তথ্য (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি) থেকে জানা যায়, রমজান ঘিরে এ সময়ে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬৪ টন ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে। কাস্টমস জানায়, তিন মাসে চাহিদার চেয়েও বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে। মজুতও রয়েছে পর্যাপ্ত।

বিশ্ববাজারের দফায় দফায় ভোজ্যতেলের দাম কমায় দেশেও লিটারপ্রতি ১০ টাকা দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। নতুন নির্ধারিত এ দর ১ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।

ভোজ্যতেল ও চিনির অন্যতম শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রমজান ঘিরে চিনি ও ভোজ্যতেলের যে চাহিদা তার চেয়ে বেশিই মজুত আছে আমাদের। সুতরাং রমজান ঘিরে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।’

দেশে ছোলার বার্ষিক চাহিদা দেড় লাখ টন। এর মধ্যে রমজানেই চাহিদা ১ লাখ টন। গত তিন মাসে ছোলা আমদানি হয়েছে ৯১ হাজার ৩৫৪ টন। আগের মজুতের সঙ্গে তিন মাসের আমদানি করা ছোলা আর পথে খালাসের অপেক্ষায় থাকা আরও ছোলা যোগ হলে ঘাটতি নয়; বরং ছোলা উদ্বৃত্ত থাকবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। তারপরও বাজারে ছোলার দাম বাড়ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি ছোলা ১০৫-১১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়। আর টিসিবির হিসাবে গতকাল ছোলা বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা কেজিতে। সংস্থাটি বলছে, সপ্তাহখানেক আগে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১১০ টাকায়।

রমজান ঘিরে এ বছর খেজুরের দামে রীতিমতো নৈরাজ্য চলছে। বাড়তি শুল্কের অজুহাতে খেজুরের দাম এখন আকাশচুম্বী। শুল্ক বাড়ানোর অজুহাতে ব্যবসায়ীরা খেজুরের দাম যে যেভাবে পারছেন বাড়াচ্ছেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব চেয়ে সাধারণ মানের খেজুর কেউ ২০০, কেউ ২৫০ আবার কেউ তা ৩০০-৩৫০ টাকায়ও বিক্রি করছেন। টিসিবির হিসাবেও প্রতি কেজি খেজুর ২৫০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। অথচ এক বছর আগে সাধারণ মানের প্রতি কেজি খেজুর ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

গত মাসে খেজুরের শুল্ক কিছুটা কমানোর ফলে প্রায় চাহিদার কাছাকাছি খেজুর আমদানি হয়েছে। রোজা শুরুর আগে আরও খালাস হবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত তিন মাসে ৩৩ হাজার ৫৪০ টন খেজুর আমদানি হয়েছে। মার্চ মাসে আরও খালাস হয়েছে। রোজা শুরুর আগ পর্যন্ত খালাস হবে। এ সময়ে ৫০ হাজার টন ছাড়িয়ে যেতে পারে খেজুর আমদানি।

খেজুরের অন্যতম শীর্ষ আমদানিকারক সাথি ফ্রেশফ্রুটের স্বত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ ফ্রেশফ্রুট আমদানিকারক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, শুল্ক বেশি হওয়ায় এবার খেজুরের দাম বেশি। তবে শেষ সময়ে খেজুর আমদানি হয়েছে। বাজারে ঘাটতি নেই।

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জবাবদিহি না থাকায় যে যেভাবে পারছেন বাজারে মুনাফা করছেন। বাজারে যদি মজুত ঠিক থাকে, তাহলে দাম বাড়বে কোন কারণে? আসলে কার্যকর নজরদারি নেই। 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ