খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল নেই। তবে মানুষের লাগানো গাছপালাও নির্বিচারে কাটার ফলে খাদ্যসংকটে পড়েছে বন্য প্রাণী। বসতি এলাকায় বানরের অবাধ বিচরণে ফল, সবজি, ঘরের খাবার সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না! বানরের আক্রমণের ভয়ে থাকছে শিশুরা।
বন বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন, খাবারের সংকটে বন্য প্রাণীরা দিশেহারা হয়ে লোকালয়ে চলে আসছে। ফলদ গাছ রক্ষা ও রোপণ করা ছাড়া এ সংকটের সমাধান নেই।
উপজেলার একসত্যাপাড়া, রহমাননগর, পাঞ্জারামপাড়া, চেঙ্গুছড়া, বড়বিল, পান্নাবিল, ডাইনছড়ি, কর্নেল বাগান, এয়াতলংপাড়া এলাকায় কয়েক বছর ধরে বানরের একাধিক দলের উপদ্রব দেখা গেছে। এতে ওই এলাকায় চাষাবাদে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন চাষিরা। জমির ধান, উৎপাদিত সবজি, গাছের ফল বানরের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না।
রহমাননগরের মো. রাশেদ বলেন, ‘বানরে আমার তৈরি হাইব্রিড পেঁপেবাগান, লাউখেত সাবাড় করে ফেলেছে। এখন ঘরের চালে বসে কাঁঠাল খাওয়া শুরু করেছে। ১৫০-২০০ বানর ঝাঁকে ঝাঁকে এসে হানা দেয়। ঘরের ছোট শিশুরা আতঙ্কে থাকে। এই বানরের দলকে তাড়াতে গেলে উল্টো তেড়ে আসে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ভয় দেখায়।’
পাঞ্জারামপাড়ায় মো. সোহেল মিয়া বলেন, ‘বানরের অত্যাচারে ঘরে-বাইরে কিছুই নিরাপদ না। আম, কাঁঠাল, তেঁতুল, জলপাই, লাউ, সবজি, শাক-লতা সবই খেয়ে সাবাড়। কীভাবে বানরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাব ভেবে কূল পাচ্ছি না।’
উপজেলা বন বিভাগের বন কর্মকর্তা উহ্লামং চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিনিয়ত যেভাবে বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে, সে অনুযায়ী গাছ লাগানো হচ্ছে না। ফলে খাবারের সংকটে বন্যপ্রাণীরা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। পরিবেশ রক্ষায় এদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। আবার কৃষকও তাঁর উৎপাদিত ফসল রক্ষা করে বেঁচে থাকতে হবে। তাই বনের ফলদ গাছ রক্ষা ও রোপণে এগিয়ে এলেই বানরসহ বন্যপ্রাণীর খাদ্যঘাটতি পূরণ হবে। এতে বানর লোকালয়ে আসবে না। এর বিকল্প নেই।’