মেহেরপুরের গাংনীতে প্রায় দুই বছর পর কবর থেকে আসাদুজ্জামান (৪২) নামে এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের চান্দামারী গ্রামের কবরস্থান থেকে তাঁর মরদেহ উত্তোলন করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার-পুলিশ। আসাদুজ্জামান চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মোচাইনগর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।
আসাদুজ্জামানের ছোট ভাই ও মামলার বাদী হাসানুজ্জামান লিটন জানান, ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে চুয়াডাঙ্গা সদরের হাসপাতালপাড়ার মহিবুল হকের মেয়ে মোনালিসা হক লোপার সঙ্গে আসাদুজ্জামানের বিয়ে হয়। যশোরে কনকর্ড ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরির সুবাদে এম এম কলেজের পাশে ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতেন আসাদুজ্জামান। একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন নরসিংদী জেলার বাখরনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে হুমায়ন কবির (৩৫)। তাঁর (হুমায়ন কবির) সঙ্গে লোপার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জেনে চুয়াডাঙ্গা শহরে এসে আরগন ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি নেন তাঁর ভাই। এরপরও ভাবি হুমায়নের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এর মধ্যে লোপা ওল্ড জেএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পায়। পরে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
হাসানুজ্জামান লিটন আরও জানান, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ রাতে বাড়িতে খবর পাঠানো হয় আসাদুজ্জামান অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। পরদিন লাশ পার্শ্ববর্তী চান্দামারী গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মামলার বাদী হাসানুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে লোপা ও হুমায়ন বিয়ে করেন। তাঁদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে হুমায়ন কবির কীভাবে আসাদুজ্জামানকে লোপা হত্যা করেছে সব তথ্যউপাত্ত আমাদের জানান। এ ঘটনায় গত ৩ জানুয়ারিতে চুয়াডাঙ্গা সদর আমলি আদালতে লোপা ও হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইদ হোসেন জানান, আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশনা দেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা ২৫ জানুয়ারি মামলাটি নথিভুক্ত করে। ২৬ জানুয়ারি হুমায়ন কবিরকে গ্রেপ্তার করে তিন দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়। তিনি চুয়াডাঙ্গা কারাগারে আছেন। পলাতক প্রধান আসামি মোনালিসা হক লোপাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।