গ্রাহকদের বকেয়া বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২। কাউনিয়ায় গত মে মাস পর্যন্ত বকেয়া প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার বিল আদায়ে এলাকায় চলছে মাইকিং। উপজেলা সদরের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লা ও তিস্তার চরাঞ্চলে প্রচার চালানো হলেও বিল পরিশোধে তেমন আগ্রহ পাওয়া যাচ্ছে না বলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে জানা গেছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর হারাগাছ জোনাল কার্যালয় সূত্র জানায়, শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় থাকা কাউনিয়ার হারাগাছ পৌরসভা, সারাই ও হারাগাছ ইউনিয়ন, গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও সেচ গ্রাহক আছে ৪৬ হাজার ৯৬৮টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অফিসের ৭ লাখ ২২ হাজার ৭৯৭ টাকাসহ একাধিক আবাসিক, বাণিজ্যিক ও সেচ গ্রাহকের মে মাস পর্যন্ত ৩ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৪৫৬ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। যেখানে হারাগাছ পৌর ভবনের ৪ লাখ ৬১ হাজার ৯০৬ টাকার বিল বকেয়া আছে। পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার নোটিশ করার পরও প্রতিষ্ঠানটি বিল পরিশোধ করছে না।
জোনাল কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আরিফুল ইসলাম শোয়েব বলেন, ‘প্রায় ৪ কোটি টাকার বকেয়া বিল তুলতে দুই সপ্তাহ ধরে পৌর শহরসহ গ্রামগঞ্জ, অলিগলি, পাড়া-মহল্লা ও তিস্তার চরাঞ্চল এলাকায় সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু বিল পরিশোধে গ্রাহকদের তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। মাইকিংয়ের পর বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিল আদায়সহ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’
অন্যদিকে সমিতির কাউনিয়া সাব জোনাল কার্যালয়ের ডিজিএম মো. জোবায়ের আলী বসুনিয়া জানান, উপজেলার সদর, বালাপাড়া, শহীদবাদ, কুর্শা ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে গ্রাহক আছে ৪১ হাজার ১১টি। এসব গ্রাহকের মধ্যে অনেকে মে মাস পর্যন্ত ২ কোটি ৬৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫৩৪ টাকার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেনি। এর মধ্যে সদরে বকেয়ার পরিমাণ বেশি।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. হারুনুর রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দেশের ন্যায় রংপুর জেলা শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে। সারা বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পরও এ অঞ্চলের গ্রাহকদের বিপুল অঙ্কের বিল বকেয়া রাখার বিষয়টি দুঃখজনক। অথচ অন্য অঞ্চলের গ্রাহকেরা বিল পরিশোধে অবহেলা করেন না। তাঁরা যথাসময়ে বিল পরিশোধ করেন।
জি এম হারুনুর জানান, কাউনিয়া, হারাগাছ, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া জোনাল এবং মডার্ন সাব জোনাল কার্যালয়ের আওতায় গ্রাহকেরা প্রায় ৩২ কোটি টাকার বিল বকেয়া রেখেছেন। ইতিমধ্যে জোনাল ও সাব জোনাল কার্যালয়ের পৃথক টিম বকেয়া আদায়ে মাঠে নেমেছে। গ্রাহকেরা যেন তাঁদের সুবিধামতো স্থানে বিল পরিশোধ করতে পারেন, এ জন্য গ্রামগঞ্জে ও হাটবাজারে অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হচ্ছে। এ ছাড়া বকেয়া রাখা গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে।