রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। তাঁর পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র কেনেন।
একই দিনে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবুর পক্ষেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে নগর উন্নয়ন ফোরাম নামের একটি সংগঠন। দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে বাবু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অবস্থানে অনড় থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ডালিয়ার মনোনয়নপত্র নেওয়া আবুল কাশেম বলেন, ‘বুধবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সঙ্গে রয়েছি। আমাদের বিশ্বাস আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী রংপুর সিটি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। নেত্রী যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাঁর পক্ষেই দলের সবাই কাজ করবেন। আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রীকে রংপুর সিটিতে নৌকার মেয়র উপহার দেব ইনশা আল্লাহ।’
এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী বাবুর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা নগর উন্নয়ন ফোরামের সদস্যসচিব ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের নেতার জন্মস্থান রংপুর। এখানেই তাঁর শৈশব, কৈশোর, যৌবন কেটেছে এবং রাজনৈতিকভাবে বেড়ে ওঠা। তাঁর ৪৪ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি এই অঞ্চলের মানুষের অধিকারের জন্য, উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য। যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এতে করে আওয়ামী লীগ পিছিয়ে যাবে।’
দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা বাবু বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব, আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি নির্বাচিত হলে যৌক্তিক দাবিগুলো আদায় করব ইনশা আল্লাহ। আমি রংপুরের মানুষের স্বার্থে দল থেকে বহিষ্কৃত হতেও রাজি আছি। আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রীকে কেউ ভুল বুঝিয়ে এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছেন।’
আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডালিয়া সম্পর্কে বাবু বলেন, ‘উনাকে দিয়ে রংপুরের মানুষের কোনো উপকার হয়নি। তিনি যখন সংসদ সদস্য ছিলেন, তখন রংপুরের একজন মানুষেরও উপকারে আসেননি। তিনি তো রংপুরের মানুষই না। আমাকে দল যদি মনোনয়ন দিত, তাহলে রংপুরে যে কর্মসংস্থান গড়ে ওঠেনি আমি তা করার চেষ্টা করতাম।’
উল্লেখ্য, তৃতীয়বারের মতো রসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই এবং ৮ ডিসেম্বর তা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৯ ডিসেম্বর। এরপর প্রার্থীরা ১৭ দিন প্রচারের সুযোগ পাবেন। ২৭ ডিসেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হবে।