রোকেয়া বেগমের বয়স ৬৪ বছর। ২০ বছর আগে হারিয়েছেন স্বামীকে। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেলা করতে কষ্ট হয় তাঁর। নিঃসন্তান রোকেয়া বর্তমানে নানান রোগে আক্রান্ত। টাকার অভাবে হচ্ছে না তাঁর চিকিৎসা। তবুও জোটেনি কোনো বিধবা বা বয়স্ক ভাতার কার্ড।
বয়স্ক ভাতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো লাভ হয়নি। পেয়েছেন শুধু আশ্বাস। বিধবা রোকেয়া বেগমের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমীরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ গ্রামে। বর্তমানে ভাতার কোনো বরাদ্দ না থাকায় কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না সমাজসেবা অফিস। নতুন বরাদ্দ পেলে বৃদ্ধা রোকেয়ার ভাগ্য খুলতে পারে জানানো হয়েছে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আপাতত বয়স্ক ভাতা কার্ডের নতুন কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ আসলে তিনি পাবেন।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০ বছর আগে রোকেয়া বেগমের স্বামী আবদুল আজিজ মোল্লা মারা যান। তাঁর কোনো সন্তান নেই। স্বামী মারা যাওয়ার পর করিমগঞ্জ গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি আশ্রয় নেন। মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় তিনি কোনো রকম বেঁচে আছেন।
রোকেয়া বেগম বলেন, ‘শরীরে শক্তি পাই না বলে, কোনো কাজও করতে পারি না। আমি বিভিন্ন রোগে ভুগছি। ঠিকমতো চলতেও পারি না। একটি কার্ডের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাকে একটি কার্ড দেননি।’
করিমগঞ্জের বাসিন্দা ফরহাদ আলম বলেন, ‘রোকেয়া বেগম কার্ড পাওয়ার যোগ্য। তাঁর আপনজন বলতে তেমন কেউ নেই।’
রায়পুরা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি এস এম শরিফ বলেন, ‘আমি এবং আমার আম্মা আমীরগঞ্জ ইউপির নারী সদস্য দুইবার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে তাঁর বয়স্ক ভাতার জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু তিনি কার্ড পাননি।’
আমীরগঞ্জ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, ‘আগের চেয়ারম্যান মারা যাওয়ার পর আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। তাঁর কার্ড না পাওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। তবে বর্তমানে বয়স্ক ভাতার জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ আসলে তাঁকে সবার আগে দেওয়া হবে।’