গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রোস্টার অ্যাপারেলস নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার সামনে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে আতঙ্ক তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দিনের বিভিন্ন সময়ে অজ্ঞাতনামা যুবকেরা কারখানার মূল ফটকের সামনে ৩০ থেকে ৪০টি মোটরসাইকেল নিয়ে নিয়মিত এ মহড়া দিচ্ছেন। এ ছাড়া কারখানার সাধারণ শ্রমিকদের নিয়মিত হুমকি দেওয়াসহ তাঁদের টিফিনের ডিম ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কারখানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের উপজেলার পটকা গ্রামে উৎপাদন শুরু করে প্রোস্টার অ্যাপারেলস। কিন্তু গত এক বছর আগে থেকে নিয়মিত হুমকির কারণে কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। নিয়মিত হুমকির কারণে কারাখানাটির চীনা ও বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্ক নিয়ে কাজ করছেন।
কারখানাটির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘২০১৯ সালে ১৯ ডিসেম্বর হামলা করে কারখানা গাড়ি আটকিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমরা ৭ ব্যক্তির নামে মামলা করি। যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।’
তিনি জানান, গত ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি কারখানার শ্রমিকদের টিফিন অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ যুবক জোর করে ছিনতাই করে নিয়ে যান। এরপর স্থানীয় থানা-পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক বিজিএমইএ এবং চাইনিজ দূতাবাসে অবহিত করা হবে।
প্রোস্টার অ্যাপারেলস কারখানার মহাব্যবস্থাপক জু জুনাও বলেন, ‘এভাবে হুমকি ও মহড়ার ঘটনা ঘটতে থাকলে কারখানা পরিচালনা করা সম্ভব নয়। নিরুপায় হয়ে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে। পুলিশ এ বিষয়ে আমাদের আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছে না।’
তিনি জানান, মহামারি করোনা ভাইরাসের সময় কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল দেড় মাস। সে সময়েও সকল শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন সঠিক সময়ে পরিশোধ করা হয়েছে। গত তিন বছরে কারখানা পরিচালনা করে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি জানান। এরপরও কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে মহড়া দেওয়ার কারণে কারখানা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের সমস্যা জানানোর পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়ে থাকে। কারখানা কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা করতে সব সময় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
গাজীপুরের পুলিশ সুপার এসএম সফিউল্লাহ বলেন, ‘মহড়ার বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের অবহিত করেছেন। কারখানার নিরাপত্তা বিষয়ে পুলিশ সব সময় সহযোগিতা করবে।’