হোম > ছাপা সংস্করণ

হেমন্তের দেবকাঞ্চন

চয়ন বিকাশ ভদ্র

কাঞ্চন বসন্তের ফুল হলেও দেবকাঞ্চন ফোটে হেমন্তে। কুয়াশার চাদর জড়ানো হেমন্তে শিশিরভেজা দেবকাঞ্চনের শোভা চোখজুড়ানো। ফুলের মিষ্টি সৌরভে ছুটে আসে কীটপতঙ্গ। তাতেই ঘটে পরাগায়ন।

দেবকাঞ্চনের আদিনিবাস হিমালয়ের পাদদেশ ও ভারতের আসাম। বৈজ্ঞানিক নাম Phanera purpurea। এটি ফ্যাবিসি পরিবারের একটি উদ্ভিদ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গাছ উপমহাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়ে। একেক দেশে একেক নামে পরিচিতিও পেয়েছে এই গাছ ও তার ফুল। এর মধ্যে হংকং অর্কিড ট্রি, পার্পল বহিনিয়া, ক্যামেলস ফুট, বাটারফ্লাই ট্রি, হাউয়াইয়ান অর্কিড ট্রি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

দেবকাঞ্চন মাঝারি আকারের গাছ। বেশ কষ্টসহিষ্ণু। ৮ থেকে ১০ মিটার উঁচু হয়। মাথা ছড়ানো। ফুল সুগন্ধি, সাদা বা বেগুনি। পাতাসহ মাথা ছড়ানো থাকে। গাছের পাতা সবুজ, শিরা-উপশিরা স্পষ্ট। পাতার মাথা ভোঁতা। একই বোঁটার পাতার মধ্যে দুটি ভাগ থাকে। আবার দুটি পাতা জোড়া দিলে একটি অন্যটির সমানে সমান। দেবকাঞ্চনের অনন্য এক বৈশিষ্ট্য এটি। এর পাতা রক্তকাঞ্চনের চেয়ে আকারে একটু বড়, গাছটিও।

দেবকাঞ্চন ফুল ৬ থেকে ৮ সেন্টিমিটার চওড়া, সুগন্ধি। কয়েকটি পুষ্প একত্রে একটি ডাঁটায় থাকে। গাছজুড়ে ফোটে এই ফুল। পাপড়ি পাঁচটি, অসমান ও লম্বাটে, মুক্ত। ফল শিমের মতো চ্যাপ্টা, বীজ ১২ থেকে ১৬টি। শুঁটিও শিমের মতো। চৈত্র মাসে নিষ্পত্র গাছে ঝুলন্ত ফলগুলো সশব্দে ফেটে বীজ ছড়ায়। পরিপক্ব বীজের রং কালচে খয়েরি।

ঢাকার রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, জাতীয় সংসদ ভবনসংলগ্ন বিজয় সরণি, আজিমপুর রোড ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের পাশে, বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ ক্যাম্পাসে দেবকাঞ্চনের দেখা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জয়নুল উদ্যানের প্রবেশপথের সামনের রাস্তায় রয়েছে সাদা দেবকাঞ্চনের গাছ। ময়মনসিংহের মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগেও দেবকাঞ্চনের দেখা মিলবে।

কার্তিক মাসে দেবকাঞ্চন গাছে ফুল ফুটতে শুরু করে, পাতার ফাঁকে ডালগুলো ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। হালকা বেগুনি ছাড়াও এর পাপড়ি মৃদু রক্তিম, গোলাপি বা সাদাটে হতে পারে। শীতের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফুল থাকে। বীজ থেকে সহজেই চারা হয়।

দেবকাঞ্চনের কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে। এর মূল বায়ুনাশক। ফুল রেচক রূপে ব্যবহৃত হয়। বাকল আমাশয়ে উপকারী। বাকলের ক্বাথ ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়। কাঠ মাঝামাঝি শক্ত এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ও গৃহনির্মাণের উপযোগী।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ