বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের মাহিলাড়া-সরিকল সড়কের ভেদর খালের সেতুটি সংস্কারের অভাবে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ২০ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় সেতুর আরসিসি ঢালাই খসে পড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।
পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেতু দিয়ে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০০১-০২ অর্থবছরে গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের ভূমি অফিসের সামনে ভেদর খালের ওপর একটি আরসিসি ঢালাই সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। ২০ বছরে সংস্কার না হওয়ায় সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ৫-৭ বছর ধরেই সেতুটির দশা এমন খারাপ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ যেন বিষয়টি দেখেও দেখছেন না।
দেখা যায়, বর্তমানে সেতুর দুই জায়গায় ঢালাই খসে রড বের হয়ে গর্তে পরিণত হয়েছে। সেতুটির রেলিং ভেঙে পড়ে গেছে। ওই গর্তের কারণে সেতু দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। গর্তের মধ্যে কাঠ দিয়ে মোটরসাইকেল, অটোরিকশাকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ ও পথচারী।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রানা তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, ‘সেতুটির বেহাল দশা একদিনে হয়নি। গত ২০ বছরে সেতুটির কোনো সংস্কার হয়নি। গত ৫-৭ বছর ধরে সেতুটি ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রথম দিকে সেতুটির সামান্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, সংস্কারের অভাবে আস্তে আস্তে ঢালাই ভেঙে সেতুর দুই দিকে বড় গর্ত হয়েছে।’
স্থানীয় মোটরসাইকেল চালক সঞ্জয় বলেন, ‘সেতুটি সংস্কারের জন্য আবেদন করেছি, কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেই। এখানে প্রতিদিন সেতুর গর্তের মধ্যে পড়ে ৪-৫টি দুর্ঘটনা ঘটছে।’
ব্যবসায়ী সেলিম কবিরাজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নিজের টাকায় সেতুটির সংস্কার করেছিলাম। কিন্তু আবার সেতুটি ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।’
মাহিলাড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাহিলাড়া বাজারে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। হাটের দিন এখানকার মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এলাকার ব্যবসায়ী এবং মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুর রহমান বলেন, ‘মাহিলাড়া ভূমি অফিসের সামনের সেতুটির দুরবস্থার সম্পর্কে আমি জানি না। সেতুটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে সেতুটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’