আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের মধ্য বাকাল গ্রামের দেব প্রসাদ কর্মকার হত্যা মামলায় ৭ মাসে তিন বার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হয়েছে। কিন্তু দেব প্রাসাদের মৃত্যু রহস্যের কুলকিনারা হয়নি।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাকাল গ্রামের দেব প্রসাদ কর্মকারের সঙ্গে একই গ্রামের কাদের ভাট্টির মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। দেব প্রসাদ কর্মকার ২০০৭ সালে আদালতের রায়ে জমি ফিরে পান। এরপর প্রতিপক্ষ একই গ্রামের কাদের ভাট্টি, তার ছেলে ফিরোজ ভাট্টি, ফারুক ভাট্টি, সাইফুল ভাট্টি, ফরিদ ভাট্টি, মেয়ে জামাতাসহ কয়েকজন দেব প্রসাদ কর্মকারকে হত্যার হুমকি দেন। দেব প্রসাদ কর্মকার চলতি বছরের ২২ এপ্রিল রাতে নিখোঁজ হন তিনি। ২৫ এপ্রিল পরিত্যক্ত একটি ভিটা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে দেব প্রসাদ কর্মকারকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয় দাবী করে নিহতের মেয়ে এলিজাবেথ কর্মকার বাদী হয়ে কাদের ভাট্টি ও তার ছেলে ফিরোজ ভাট্টি, ফারুক ভাট্টি, সাইফুল ভাট্টি, ফরিদ ভাট্টিকে অভিযুক্ত করে আগৈলঝাড়ায় থানায় মামলা দায়ের করেন।
এলিজাবেথ কর্মকার বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান লাশের সুরতহাল রিপোর্টে লাশের দুই চোখ ওপরে ফেলা, পায়ের আঙুলগুলোর নখ তুলে ফেলা, পেটের নিচে ও মাথায় বড় ধরনের আঘাতের চিহ্নর কথা উল্লেখ করেননি। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এসব এসেছে।
উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিষপানের আলামত পেয়েছি। সেভাবেই সুরতহাল রিপোর্ট করেছি।’
এলিজাবেথ কর্মকার বলেন, পরবর্তীতে আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে বরিশাল পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ সুপার মামলাটি তদন্তের জন্য বরিশাল গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মো. মাহাবুব হোসেনকে দায়িত্ব দেন। তিনি বদলি হলে পুলিশ সুপার বরিশাল গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক সোহেল মোল্লাকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন। পরে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি ১২ অক্টোবর বরিশাল পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক মো. নাঈম বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন।
কাদের ভাট্টি ও ফিরোজ ভাট্টিকে মোবাইলে ফোন দিলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দেব প্রসাদ কর্মকার আত্মহত্যা করেছেন। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে হয়রানি করতে মামলায় আমাদের জড়ানোর চেষ্টা করছে।
উপপরিদর্শক মো. নাঈম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই রহস্য উদ্ঘাটন হবে।
বরিশাল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থেই এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। খুব শিগগিরই জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’