গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ে গাছগাছালির অপরূপ শোভা। গাছের আড়াল থেকে কানে ভেসে আসে পাখিদের ডাক। রাস্তার দুই পাশে থাকা অসংখ্য লটকনের বাগান যে কারও চোখ জুড়াবে। অধিকাংশ গাছের নিচ থেকে ওপরের অংশের শাখা-প্রশাখায় থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁচা-পাকা লটকন। দেখে মনে হয় যেন পুরো গাছে হলুদ-সবুজ রঙের ফুল ফুটেছে। চাষিরা বাগানের পাকা লটকন গাছ থেকে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। কেউ আবার বাজারে বিক্রির জন্য প্রক্রিয়াজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গত সোমবার সকালে এমন দৃশ্য দেখা যায় নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে শিবপুর, বেলাব, রায়পুরা উপজেলার মরজালসহ কয়েকটি গ্রামে। এসব গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়িতেই রয়েছে ছোট-বড় লটকন বাগান।
লটকন গাছের গোড়া থেকে শুরু করে ডালপালা পর্যন্ত থোকায় থোকায় ফলন আসে। অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় লটকন চাষে আগ্রহ বাড়ছে এই এলাকার চাষি ও বেকার যুবকদের। এখানকার লটকন যাচ্ছে বিভাগের অন্যান্য জেলাসহ বিশ্ববাজারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, নরসিংদীর রায়পুরা, শিবপুর ও বেলাব উপজেলায় ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে।
মরজাল এলাকার চাষি কাজী কামাল হোসেন বলেন, সারা দেশের বাজারের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও লটকন রপ্তানি হয়। বাছাই করা সুস্বাদু বড় লটকনগুলো পাঠানো হয়। সাধারণত লটকন দু-তিন দিন পর্যন্ত রাখা যায়। প্যাকেট করা ওই লটকন সাত-আট দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ সম্ভব। মরজাল বাসস্ট্যান্ড বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাষি ও বিক্রেতারা গাছ থেকে সংগ্রহ করে লটকন নিয়ে আসছেন। রং ও আকারভেদে প্রতি মণ লটকন ২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। মরজাল বাজারে প্রতিদিন প্রায় ৯-১০ লাখ টাকার লটকন কেনাবেচা হয়।
বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিলন মিয়া বলেন, ‘এখান থেকে পাইকারেরা সারা দেশে সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। ভরা মৌসুমে ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা।’