যশোরে উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্তের হার। যশোরে জ্যামিতিক হারে করোনা রোগী বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জনসাধারণের মাঝে উদাসীনতা দেখা গেছে। প্রশাসন এ বিষয়ে অভিযান শুরু করলেও, জনসাধারণের ঢিলেমি আর অসচেতনতার কারণে এখানে উপেক্ষিত সরকারি বিধিনিষেধ।
যশোর সিভিল সার্জনের মুখপাত্র ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, গতকাল মঙ্গলবার পাওয়া সর্বশেষ ফলাফলে জেলায় ১৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জিনোম সেন্টার থেকে ৫৯টি নমুনাতে ৯ জন এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৭৪ নমুনায় ২৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। নমুনার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এক সপ্তাহের করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১৯ জন। চলতি মাসের ১০ তারিখে জেলায় করোনার রোগী ছিলেন ৭৩ জন। অর্থাৎ এক সপ্তাহে সেই রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৬ জনে।
চৌগাছা থেকে শহরে কাজে আসা আয়ুব হোসেন বলেন, ‘বাসে সিটের অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া নিষেধ থাকলেও, তা মোটেই মানা হচ্ছে না। একই অবস্থা দেখলাম শহরের দড়াটানা, চিত্রা মোড়, হাসপাতাল এলাকাতেও। মানুষজন মাস্ক ছাড়াই চলাচল করছেন। দোকান বা অফিসেও প্রায় একই অবস্থা। কিছু মানুষ শুধু মাস্ক ঝুলিয়ে রাখছেন। আর যারা সঠিকভাবে মাস্ক পড়ছেন সেই সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা।’
শহরের মনিহার, মুড়লী ও চাঁচড়া এলাকার বাসস্ট্যান্ড ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে বাস ছাড়াও ইজিবাইক, থ্রি হুইলারে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বিধিনিষেধ জারি করেছে। আমরা সে অনুযায়ী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কাজ করছি। জেলা প্রশাসকের সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে প্রশাসন উদ্যোগ নেবে।’
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, ‘যশোরের প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ইতিমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শুরু করেছেন।’