রাজধানীর হাতিরঝিলে মহানগর প্রজেক্টে ফ্ল্যাটে ঢুকে মারধর করে তানজিল জাহান ইসলাম তামিম (৩২) নামের এক প্রকৌশলীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা। গতকাল বৃহস্পতিবার মহানগর প্রজেক্টের ৪ নম্বর রোডের ডি ব্লকে একটি বাড়ির আটতলায় ঘটনাটি ঘটে।
পরিবারের অভিযোগ, নিজেদের জমিতে নির্মিত অ্যাপার্টমেন্টে ফ্ল্যাট বুঝে পাওয়া নিয়ে আবাসন কোম্পানি প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজের সঙ্গে বিরোধের জেরে কোম্পানির কর্ণধার শেখ রবিউল আলম রবির নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শেখ রবিউল স্থানীয় বিএনপির নেতা।
এ ঘটনায় আবাসন কোম্পানির এক প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটকের কথা জানিয়েছে হাতিরঝিল থানার পুলিশ। তামিম চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাস করেন।
নিহত তামিমের মামা মাসুদ করিম জানান, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়ির সাততলায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকে তামিমদের পরিবার। জমির মালিক তামিমের বাবাসহ তিনজন। চুক্তি অনুযায়ী প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজের তামিমদের পাঁচটি ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা। কিন্তু তামিমরা সাততলার যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেটি কোম্পানি বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। এ নিয়ে বছরখানেক আগে একটি মামলা করা হয়।
মাসুদ করিম আরও বলেন, এ বিষয়ে গত বুধবার আবাসন কোম্পানির সঙ্গে তামিমদের সমঝোতা হয়। আটতলায় দুটি ফ্ল্যাট তাঁদের দেওয়ার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী গতকাল সকালে আটতলার ফ্ল্যাটে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর সময় আবাসন কোম্পানির ব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ মির্জার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতে হামলা চালায়। বাগ্বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে তারা তামিমকে মারধর করে। তামিমকে কিলঘুষি মারে ও গলা টিপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে তামিমের বড় ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে গেলে তাঁকেও মারধর করে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চায় তামিমের পরিবার। মারধরে অসুস্থ তামিমকে মনোয়ারা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ বলেন, তাঁকেও মারধর করা হয়েছে। তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে শেখ রবিউলের সঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। তামিমের বাবা ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেছেন।
ওই হাসপাতাল থেকে তামিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, কয়েকজন লোক তামিমের বুকে ঘুষি মারলে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আবাসন কোম্পানির প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।