বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক হয়ে উঠছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। এখনো থামেনি ডেলটার ভয়াবহতা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত ভালো হলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং সংক্রমণ মাঝে মাঝেই বেড়ে যাচ্ছে, যা বিশেষজ্ঞদের ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, আগের দিন দেশে ২৯১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা ৩৫২ জনে উঠেছে। গত আট দিনের মধ্যে যা সর্বোচ্চ শনাক্ত। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে তিন শ জনই ঢাকা বিভাগের।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সংক্রমণ বাড়লেও আগের দিনের মতোই গতকাল বুধবারও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া একমাত্র ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এতে করে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ৫৩ জনে ঠেকেছে।
এদিকে করোনা বিষয়ক নিয়মিত বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম আবারও সতর্ক বলেছেন, যেকোনো মুহূর্তে দেশে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। ওমিক্রনের বিস্তার সেই শঙ্কা আরও বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে সংক্রমণের মাত্রা দুই শতাংশের ঘরে থাকলেও আত্মহারা হওয়ার কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ ভারতেও ওমিক্রনের বিস্তার ঘটছে। এ জন্য আমাদের স্বাস্থ্যবিধির প্রতি জোর দিতে হবে। মাস্ক পরতে হবে।
এদিকে, ভারতে বেড়েই চলেছে ওমিক্রনের সংক্রমণ। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে। তাই এবার বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষের অনুষ্ঠানে নানা ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে দিল্লি। ইতিমধ্যেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা কোনো ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ দিল্লিতেই ৫৩টি ওমিক্রন সংক্রমণের নমুনা মিলেছে। ভারতে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দু শ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এমনকি চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর জিয়ানে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরটিতে কঠোর লকডাউন জারি করা হচ্ছে। এতে শহরটির এক কোটি ৩০ লাখ মানুষকে এখন ঘরবন্দী থাকতে হবে। স্থানীয় সময় আজ থেকে শহরটিতে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার কথা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, নভেম্বরের দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত ওমিক্রন এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০৬টি দেশে ছড়িয়েছে। সেভাবে প্রাণহানির খবর না পাওয়া গেলেও এর বিস্তার ডেলটার চেয়েও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলেও আশঙ্কা সংস্থাটির।