চট্টগ্রামে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে হালিশহর ও বন্দর এলাকায় এই রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব এলাকা থেকে গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার—এই পাঁচ দিনেই ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৮ জন রোগী।
গত এক সপ্তাহে বিআইটিআইডিতে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে গত শনিবার এক রোগী মারাও যান। অবশ্য বেশির ভাগই চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
বিআইটিআইডি সূত্র জানায়, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ২১ শতাংশই কলেরায় আক্রান্ত। তাঁদের বেশির ভাগই পানিশূন্যতায় ভুগছেন। গরমের কারণে কোনো খাবার কিংবা পানি থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন বিআইটিআইডির চিকিৎসকেরা। তবে ওয়াসা দাবি করেছে, তাদের সরবরাহ করা পানি থেকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে না। গভীর নলকূপের পানি থেকেই রোগীরা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।
হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মামুনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাবার ও পানি দূষণের কারণে তাঁরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করছি। আবার রোগীদের ২১ শতাংশই কলেরায় ভুগছেন। এই রোগীদের বেশির ভাগই এসেছেন হালিশহর থেকে। কিছু আছেন বন্দর এলাকার রোগীও। তাঁদের অনেকেই পানি ফুটিয়ে পান করেন না। সে জন্য আমরা ধারণা করছি, পানি থেকেই এই রোগ হচ্ছে।’
এদিকে ওয়াসা সূত্র জানায়, ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ায় গত রোববার থেকে গতকাল পর্যন্ত হালিশহর এলাকায় পাইপলাইন থেকে পানির নমুনা নিয়ে ওয়াসার নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। তবে সেখানে কোনো জীবাণুর অস্তিত্ব মেলেনি।
এ বিষয়ে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘আমরা নিয়মিতই গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা পানির নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করি। কোনো জীবাণুর অস্তিত্ব আছে কিনা দেখি। তবে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ার খবরে গুরুত্ব দিয়ে হালিশহর এলাকার পানির নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে কোনো জীবাণুর অস্তিত্ব মেলেনি।’
বিআইটিআইডির সহযোগী অধ্যাপক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাঁরা গভীর নলকূপের পানি পান করেন। সেই পানির কারণেই সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। আর ওয়াসার পানিতে সমস্যা আছে কিনা সেটি পরীক্ষা ছাড়া মন্তব্য করতে চাই না।’