সিরাজগঞ্জ এলাকায় যমুনার পানি বৃদ্ধি গতকাল বুধবারও ছিল অব্যাহত। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। এতে ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার চর ও নিম্নাঞ্চল।
এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে চরের বাসিন্দাদের মধ্যে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় পানির বিপদ সীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। গতকাল বুধবার সকালে শহরের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২০ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।
এদিকে যমুনার পাশাপাশি করতোয়া, বড়াল, ইছামতি, ফুলজোড় ও চলনবিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। ইতিমধ্যে এলাকাগুলোর বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। নষ্ট হচ্ছে কাচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাকসবজিসহ নানা ধরনের উঠতি ফসল।
এদিকে, টানা এক সপ্তাহ ধরে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বাড়ছেই। ফলে নদী ভাঙন তীব্র হয়েছে। উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের রেহাইপুখুরিয়া, দেওয়ানগঞ্জ ও চরসলিমাবাদে ভাঙনে গত এক সপ্তাহে প্রায় ২৫টি বাড়ি বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া বাঘুটিয়া ইউনিয়নের হাটাইল ও ঘুশুরিয়া চরসহ উমারপুর, ঘোড়জান, সদিয়াচাদপুর ও স্থলচর ইউনিয়নেও নদী ভাঙন শুরু হয়েছে।
চৌহালী একটি কৃষি প্রধান উপজেলা। এ উপজেলার সব এলাকায় বাদাম, তিল, কাউন, ধান, পাট, আখ ও শাক-সবজি চাষ করা হয়। দ্রুত পানি বৃদ্ধির ফলে বেশ কিছু এলাকার বাদাম তলিয়ে গেছে।
ঘুশুরিয়া চরের কৃষক মো. সামায়ন বলেন, দ্রুত পানি বাড়ায় তাঁরসহ এলাকার অনেকেরই বাদাম তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে তাঁদের আবাদি জমির অন্যান্য ফসল ডুবে নষ্ট হয়ে যাবে।
খাষপুখুরিয়া গ্রামের কৃষক মজনু মিয়া বলেন, গত কয়েক দিনের পানি বৃদ্ধির ফলে চরের নিম্নাঞ্চলে চাষ করা অনেক কৃষিজমি তলিয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, উজানের ঢল ও টানা বর্ষণের প্রভাবে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এভাবে পানি বেড়ে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নদীতীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।