এক সময় গ্রামীণ কৃষিব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল দোলনা সেচনি, সিয়ানি বা সেঁউতি। ডোবা নালা থেকে পানি উত্তোলন করে কৃষিজমিতে দেওয়ার একটি প্রাচীন কৌশল।
স্বল্প ব্যয়ে একটি মুড়ি, তেলের টিন বা বালতি সুবিধামতো কেটে দুই পাশে দুটি করে মোট চারটি দড়ি বেঁধে দুজন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পাশের নদী, খাল, বিল, পুকুরের মতো জলাশয় থেকে পানি উত্তোলন করে নির্দিষ্ট জমিতে পানি দেওয়া হয়। দুই যুগ আগেও গ্রামে-গঞ্জে হরহামেশাই চোখে পড়ত এই সেচ পদ্ধতি।
কালের পরিক্রমায় ও আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে সেচ পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। প্রাচীন পদ্ধতির সেচব্যবস্থা ছেড়ে আধুনিক সেচ পাম্পের ব্যবহার এখন সর্বত্র।
তবে আধুনিক যুগে এসেও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দোলনা সেচ ব্যবহার চোখে পড়ল ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়নে মেলেং গ্রামে। দুই কৃষক দোলনা সেচ পদ্ধতিতে ইরি ধান খেতে পানি দিতে।
কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এই জমিতে আগে ধান চাষ হতো না। তাই স্কিমের মাধ্যমে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। এবার এই জমিতে ইরি ধান চাষ শুরু করেছি। হঠাৎ করে তো আর পাম্পের ব্যবস্থা করা সম্ভব না, তাই প্রাচীন পদ্ধতিতে খেতে পানি দিচ্ছি।’
অপর কৃষক হাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘২০ বছর আগেও আমার বাবা-চাচার সঙ্গে এভাবেই জমিতে পানি দিতাম। আধুনিক যন্ত্র আসছে, তাই এখন আর এই পদ্ধতি ব্যবহার হয় না।’