Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

‘তাই খাওয়া কমাই দিছি’

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা

‘তাই খাওয়া কমাই দিছি’

‘রিকশা ভাড়া ১০ টাকা সেই বিশ বছর ধরে। এই সময়ে কত কিছুর দাম বেড়েছে, রিকশা ভাড়া বাড়েনি। দুইডা ছেলে আর একটা মেয়ে আছে আমার। বড় মেয়েটার বিয়ে দিতে পারছি না। অভাবের ঘর বোঝেনই তো। এক ছেলে শসা বেঁচে পড়াশোনা করে। অন্যজন মায়ের কাছে থাকে। এই ১০ টাকা করে ভাড়ায় আর চলছে না।’

রিকশাচালক আনিসুরের কথা টেনে পাশে থাকা ভ্যানচালক রহিম বলেন, ‘ভ্যানে তো মালপত্র টানাটানি করি। আগের মতই ভাড়া আছে, বাড়েনি। অথচ জিনিসপত্রের দাম বাড়তেই আছে। দুপুরে ভারী খাবার ছাড়া সকাল ও রাতে কম খেতে হচ্ছে বাড়িতে। এতে শরীরে আগের মতো শক্তি পাই না।’

এই দুজন শ্রমজীবী মানুষের বাড়ি মাগুরা সদরের পাথরা এলাকায়। মাগুরা ভায়না এলাকায় তাঁরা নিয়মিত ভাড়া টানেন। নিত্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় তাঁদের জীবনে নেমে এসেছে নানা পরিবর্তন। একদিকে পোশাক কিনতে পারছেন না। অন্যদিকে বাজারে কিচ্ছতা সাধন করতে হচ্ছে।

মাগুরা নতুন বাজার এলাকার সড়কের পাশে কলা বিক্রি করেন নুর মিয়া। বয়স এবার ৫০ ছুঁয়েছে। সারা দিন কলা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবারের ৬ জনের ভরণ পোষণ চলে।

নুর মিয়া বলেন, ‘আগের সপ্তাহে একদিন গরুর মাংস কিনতাম। তখন ৩৫০ টাকা কেজি ছিল। বড় ছেলেটা গরুর গোশত খুব পছন্দ করে। সে কিছুটা অসুস্থ বিধায় তার ইচ্ছাটা আমি কষ্ট করে হলেও পূরণ করি। কিন্তু গরু এখন ৭৫০ টাকা কেজি। কিনতে পারি না দুই মাস। ঈদেও গোশত কিনতে পারি নাই। গোশত কিনলে যদি তেল না হয় তয় কোনটা কিনবার পারি? তেল ২০০ টাকা কেজি কিনলে মাছ ও কেনা হয় না। কারণ চালের আবার দাম বেড়েছে। ছেলেটার ইচ্ছা আর পূরণ হয় না।’ সামনে কোরবানি ঈদ। তখন হয়তো গরুর গোশত আত্মীয়স্বজন থেকে জুটবে বলে তিনি জানান।

পুরোনো বাজার এলাকার মাংস ব্যবসায়ী কামাল শেখ জানান, আগে গরুর যা দাম ছিল কম, এখন তার দ্বিগুণ। এরপর চামড়ার দাম নেই। ১ হাজার ৮০০ টাকার একটি চামড়া বিক্রি হয় ৬০০-৭০০ টাকায়। তাই মাংসর দাম বেশি। দাম বেশি হওয়ায় গরিব মানুষেরা আর মাংস কিনতে আসে না। এমনকি মধ্যবিত্তরাও কম আসে। মাছ কিনে চলে যায়। ফলে ব্যবসা আগের জায়গাতেই নেই।

চালের দাম নিয়ে চানাচুর বিক্রেতা রাসেল বলেন, ‘মাগুরা আসি সেই ৯ কিলোমিটার দূরের কামারখারী থেকা। সারা দিন বিক্রি করে যা পাই তাতে চাল কিনে বাড়ি যাই। কিন্তু মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৬ টাকা বেড়েছে। সংসারে প্রতিদিন ৩ কেজি চাল লাগে। কি করব বলেন, আয় কম তাই খাওয়া কমাই দিছি।’

মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াছীন কবির জানান, ‘চাল তেলসহ কয়েকটির পণ্যর দাম নিয়ে প্রশাসন থেকে নজরদারি করা হচ্ছে। এ ছাড়া সীমিত আয়ের মানুষদের নানা সময়ে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসন সাহায্য করে আসছে। জেলা পরিষদ থেকে ও নিম্ন আয়ের মানুষের নানা রকম সহযোগিতা করা হয়।’

মাগুরা বাজার বিপণন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, কৃষকের ধান ঘরে তোলা শেষ পর্যায়ে। চালের দাম কমতে শুরু করবে এই নতুন ধানের কারণে। এ ছাড়া অন্যান্য যে সকল পণ্য রয়েছে তাঁর দাম অনেকটাই সরকার নির্ধারিত মূল্য বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে যেন বিক্রয় না হয় সে জন্য নিয়মিত বাজারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ সম্পর্কে মাগুরা ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা মামুন হোসেন বলেন, ‘বাজারে কোনো পণ্যর দাম তার গায়ে লেখা দামের থেকে বেশি নিলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে পারে। এ মাসে এ রকম কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। ক্রেতারা সচেতন হলে তাঁরা কোনো পণ্য কিনে ঠকবেন না।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ