জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিভিন্ন বিভাগে স্নাতকোত্তরে (মাস্টার্স) শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি-সংকট দেখা দিয়েছে। ভর্তি বাতিল, অনার্সে ড্রপ আউট, ক্লাসে অনাগ্রহ, বিষয়বস্তুর অসংগতি ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার কারণে শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীদের একাংশ। এতে মাস্টার্সের নিয়মিত ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করার বিষয়ে দাবি উঠেছে।
রেজিস্ট্রার ভবনের শিক্ষা শাখা জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরে ২ হাজার ১০৪টি আসন থাকলেও ১ হাজার ৯২৮ জন মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। একইভাবে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ২ হাজার ১০২ জনের আসনে ১ হাজার ৮০৭ জন ও ২০১৯-২০ সেশনে ২ হাজার ২৩৮ আসনের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৩৯ জন ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া সর্বশেষ তিন শিক্ষাবর্ষে যথাক্রমে ৫২, ৩৮ ও ২৩৪ জন শিক্ষার্থী স্নাতকে (সম্মান) ভর্তি বাতিল করেছেন। তা ছাড়া প্রতিবছরেই শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে অনার্স সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন। ফলে এই আসনগুলো মাস্টার্সে ফাঁকা থাকছে।
দর্শন বিভাগের ছাত্র আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমার শুধু একটি সনদ প্রয়োজন। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত না হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া না হলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব। তা ছাড়া পড়ানোর বিষয়বস্তু ও মান, আমাকে ক্লাসের প্রতি আগ্রহী করছে না। যার কারণে আমি মাস্টার্সের ক্লাসে যাচ্ছি না।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের চাকরির বাজারে অনার্সের পাশাপাশি মাস্টার ডিগ্রির গুরুত্ব রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা নামমাত্র সনদ চান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স হওয়া প্রয়োজন রিসার্চভিত্তিক। আসন পুনর্বিন্যাস করে নিয়মিত ব্যাচে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নতুনদেরও সুযোগ দেওয়া যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিয়মিত ব্যাচের ফাঁকা আসনগুলোয় ভর্তি করা উচিত। এতে জনগণের করের টাকার সৎ ব্যবহার হবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘উপস্থিতি সংকট সমাধানে নিজ নিজ বিভাগকে উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়মিত মাস্টার্সে নতুন ভর্তির বিষয়ে চিন্তার অবকাশ নেই।’