ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গবাদিপশু লালন-পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার অন্তত সাড়ে চার হাজার খামারি ও কৃষক। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হিসাবে, এবার চাহিদার চেয়ে প্রায় ১৮ হাজার বেশি পশু প্রস্তুত আছে। জুনের শেষ দিকে এসব পশু হাটে বেচাকেনা জমে উঠবে। এদিকে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার খামারি ও কৃষক।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের আশা, এবার করোনা মহামারি না থাকার কারণে হাট জমবে। ভালো দামও পাবেন খামারিরা। তবে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় কিছুটা প্রভাব পড়বে কোরবানির হাটে।
সাধারণ খামারিরা পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, চড়া দামে খাবার কিনে পশুকে খাওয়ানো হয়েছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের হাতে এখন টাকা নেই। তাই ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কা তাঁদের।
জানা গেছে, কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু মধ্যে ষাঁড় ৬ হাজার ৩৭৮ টি, বলদ ১৯১টি, গাভি ২০১ টি, মহিষ ২০৮টি, ছাগল ১৮ হাজার ১৩৩ টি, ভেড়া ৭৪৮ টি। এ বছর প্রায় ৩৬ হাজার গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলায় এ বছর পশুর চাহিদা প্রায় ১৭ হাজার ৮৩৪টি হলেও এর চেয়ে ১৮ হাজার ২৩টি পশু বেশি রয়েছে, যা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।
উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভুসি প্রতি কেজি ৫০ টাকা, খৈল ৪৮ টাকা, ক্যাটল ফিড ৩৫ টাকা ও চালের কুড়া ৩৫ টাকায়, ধানের গুঁড়া প্রতি মণ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার রবিন হোসেন নামের এক খামারি বলেন, ‘এবার কোরবানির জন্য তিনটি গরু লালনপালন করেছি। আগে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা খরচ করলেই একটা গরু পোষা যেত। এখন গো-খাদ্যের এত দাম বেড়েছে যে মাসে খরচ ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের হাতেও টাকা কম। তাই পশুর দাম কেমন উঠবে, তা নিয়ে একটা শঙ্কায় আছি।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম জানান, গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় অনেক উদ্যোক্তা এই পেশায় বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এ ছাড়া গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিদের উন্নত জাতের ঘাস চাষ ও ঘাস খাওয়ানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণসহ ঘাস চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। উপজেলায় কোরবানি জন্য এবার পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার ৮৩৪টি। আর চাহিদার চেয়ে বেশি রয়েছে ১৮ হাজার ২৩টি পশু, যা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাতেও পাঠানো যাবে।