প্রতিবছরের মতো এবারও গোদাগাড়ী উপজেলায় শীতকালীন টমেটোর ব্যাপক চাষ হয়েছে। ইতি মধ্যে জমি থেকে হাইব্রিড জাতের টমেটো সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট চাষিরা বলছেন, এবার গাছে ফলন তুলনামূলক কম ধরেছে, তবে বাজারে দাম ভালো থাকায় লাভের আশা করছেন তাঁরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২১-২০২২ মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গোদাগাড়ী উপজেলাতেই চাষ হয়েছে দুই হাজার ৯৬০ হেক্টরে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৬ হাজার মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এখন গোদাগাড়ীর পাশাপাশি পবা, তানোর ও অন্য উপজেলাগুলোর কিছু জমিতেও হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম দিকে চাষিরা জমি থেকে টমেটো তুলে কাঁচাই বিক্রি করে দেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এই টমেটো কিনে পাকানোর কাজ করেন। তারপর নিয়ে যান। শুক্রবার সকালে টমেটো তুলছিলেন গোদাগাড়ীর কৃষ্ণবাঢী কালিদীঘি গ্রামের কৃষক রজব আলী। তিনি জানান, লাভজনক হওয়ায় চাষিরা জমি বর্গা নিয়ে টমেটো চাষ করেন। বিঘাপ্রতি টমেটো চাষে খরচ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। আগের বছরগুলোতে বিঘায় ৮০ থেকে ৯০ মণ টমেটো উৎপাদন হয়েছে। তবে এবার খারাপ বীজ আর প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফলন তুলনামূলক কম।
রজব জানান, ২০ দিন আগে আড়াই বিঘা জমি থেকে প্রথম দফায় তিনি ২০ মণ টমেটো তুলেছেন। কাঁচা টমেটোই তখন বিক্রি করেছেন দুই হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে। এখন পাকানো টমেটো বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা দরে। আর কাঁচার দাম এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা।
রংপুর থেকে টমেটো কিনতে গোদাগাড়ী এসেছেন মো. হারুন। বোগদামারী গ্রামে তিন বিঘা ফাঁকা জমি লিজ নিয়েছেন টমেটোতে রোদ দেওয়ার জন্য। তিনি জানান, তাঁরা ৪৫ কেজিতে মণ ধরে কাঁচা টমেটো কেনেন। ১০০ মণ কাঁচা টমেটো পাকালে তার ওজন দাঁড়ায় ৮০ মণ।
বোগদামারী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ১০ দিন পর পর জমি থেকে টমেটো তোলা যায়। আবার কাঁচা টমেটো পাকাতেও সময় লাগে ১০ দিন। এবার উৎপাদন কম হওয়ায় দাম ভালো। শেষ পর্যন্ত এমন দাম পেলে চাষিরা লাভবান হবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপপরিচালক কে জে এম আবদুল আউয়াল বলেন, ‘টমেটো গোদাগাড়ীর প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে সবচেয়ে বেশি শীতকালীন হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ হয় এখানেই। এখনো পর্যন্ত টমেটোর দাম ভালো। তবে উৎপাদন কিছুটা কম বলে শোনা যাচ্ছে।’