রিমন রহমান, রাজশাহী
‘সোনার কাঠি, রুপোর কাঠি, কে ছোঁয়ালো অস্ফুটো কলিকায়, স্বপ্নের ভেলা ভাসিছে কলেজ প্রাঙ্গণে, কার জাদুর ছোঁয়ায়!’ বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এভাবেই ‘জাদুকর’ বলা হয়েছিল অধ্যক্ষ হবিবুর রহমানকে। তিনি যে জাদুকরই বটে! সোনার কাঠি, রুপোর কাঠি হয়তো ছোঁয়াননি, কিন্তু তাঁর সুনিপুণ জাদুকরি হাতের ছোঁয়ায় পুরোপুরি বদলে যায় ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ।
পদ্মাপারের শহরে ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ আগে থেকেই ছিল প্রাণজৌলুশে ভরপুর। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কলেজের সৌন্দর্য ও শিক্ষাব্যবস্থায় ভাটা পড়তে শুরু করেছিল একসময়। আর তখনই আলোর প্রদীপ হাতে আগমন এই জাদুকরের! যাঁর দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ে কলেজজুড়েই। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে হবিবুর রহমান তাঁর চিন্তা, মননশীলতা ও নান্দনিকতা ছড়িয়ে দিয়েছেন এ কলেজে। এটি এখন যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি সব শ্রেণিতেই দেশসেরা কলেজ।
ঐতিহ্যের আরেক জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এক গ্রাম অবিনাথপুরে হবিবুর রহমানের জন্ম, ১৯৬২ সালে। রাজশাহী কলেজের এখন এত নামডাক যাঁকে নিয়ে, হবিবুর রহমান সেই কলেজে পা রাখেন ২০০১ সালের ৩ জুন। রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।
এরপর ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট তিনি এ কলেজের অধ্যক্ষ হন। এরপর আমূল পরিবর্তন আসে প্রতিটি বিভাগের শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক লাউঞ্জ, সেমিনার কক্ষ, গ্রন্থাগার, খেলার মাঠ, ল্যাবরেটরিতে। প্রতিটি ভবনের ভেতরের ও বাইরের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। একাডেমিক ফলও ভালো হতে থাকে। অধ্যক্ষ হওয়ার দুই বছরের মাথায় জাতীয় পর্যায়ের দুটি ক্যাটাগরিতে দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায় রাজশাহী কলেজ। ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি অবসরে যান।