Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

ভাতা পেতে ভোগান্তি

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা

ভাতা পেতে ভোগান্তি

মেয়েটা শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে ভাতা পেত, যখন সে স্কুলে পড়ত। কিন্তু তিন বছর হলো সে ভাতা পায় না। মানবিক থেকে মেয়েটি এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পাস করে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে চায়। ভাতার টাকাটা তার মায়ের খুব দরকার। কেন ভাতা পায় না কিংবা আদৌ নাম আছে কি না, তা জানেন না মা ডলি বেগম। তাই মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন সময় আসেন মাগুরা শহরে সমাজসেবা ভবনে। কিন্তু সমাজসেবার কেউই তাঁকে ঠিকমতো বলছে না এই ভোগান্তির শেষ কোথায়।

মাগুরা শহরের এশিয়া মহিলা কলেজ থেকে সদ্য এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া চম্পা জানিয়েছে কথাগুলো। প্রতিবন্ধী ভাতার বই নিয়ে চম্পা আরও জানায়, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় সে প্রতিবন্ধী হিসেবে নিবন্ধিত হয়। এরপর প্রতি বছরে একাকালীন ভাতা পেত।

সমাজসেবা ভবনে রয়েছে বয়স্ক ভাতা থেকে শুরু করে বিধবা ভাতা নিয়ে নানা রকম ভোগান্তি বলে জানিয়েছেন গ্রাহকেরা। প্রতিদিন অনেকে আসেন কিন্তু কাজ হয় না। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগের অভিযোগ, লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট হলেও ব্যাংকে ভাতার টাকা ঠিকমতো পেতেন। কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার পর তাঁরা অনেকে ভাতা ঠিকমতো পাননি ছয় মাস ধরে।

আবুল বিশ্বাস (১১৫) ও তাঁর স্ত্রী জাহিদা বেগম (৮৫)। বাড়ি দেড়ুয়া গ্রামে। তাঁরা অসুস্থ থাকায় সমাজসেবা অফিসে এসেছেন তাঁদের ছেলে পিন্টু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘বাবার ভাতার কার্ড পেয়েছি চার মাস। কিন্তু তিন মাস পর পর যে টাকা দেওয়া হয়, তা মোবাইলে আসেনি। এমনকি আমার মায়ের ভাতাও আসেনি। ব্যাংকে এত ঝামেলা ছিল না। নগদে অ্যাকাউন্ট খোলার পর এই ভোগান্তি। প্রায় প্রতিদিন এই অফিসে ঘুরতে হয়।’

আঠারখাদা এলাকার হাসিনা খাতুন বিধবা। বাচ্চাদের নিয়ে কোনোরকমে চলেন। গত তিন মাস ভাতা পাননি। মোবাইলে অ্যাকাউন্ট খুলে এই পরিস্থিতি তিনি জানালেন। টাকা কবে আসবে জানেন না। এখানকার যাঁরা আছেন তাঁরা বলছেন চলে আসবে। তাই গত সপ্তাহ পরে গত রোববার এসেছেন আবার।

একই অবস্থা প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী জোছনা খাতুনের। তিনি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন আরও এক বয়স্ক ভাতাভোগী ভানু নামের এক বৃদ্ধাকে। এরা কেউই ভাতা পাননি। তাঁরাসহ আরও অন্তত ২৫ জন বিভিন্ন ভাতাভোগী সমাজসেবা অফিসে বসে ও দাঁড়িয়ে আছেন ভাতা কেন পান না সেটা জানতে। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, এখানে এলেই বলা হয়, ‘চলে যাও’। তাঁদের কথা কেউ শোনেন না।

এ বিষয়ে শহর এলাকার সমাজসেবা অফিসের অফিস সহকারী রণজিৎ কুমার জানান, অনেকেই এসব ভাতা পেয়েছেন। অল্পসংখ্যক পাননি। তবে পেয়ে যাবেন বলে জানতে পেরেছি।

উল্লেখ্য, সমাজসেবা অফিস থেকে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতা তিন মাস পর পর দেওয়া হয়। এখন প্রতিবন্ধী ভাতা মাসে ৭৫০, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা ৫০০ টাকা করে। পৌরসভার ভেতরে বয়স্ক ভাতাভোগী, ৩৯০০ জন, প্রতিবন্ধী হিসেবে ১২৬৬ এবং বিধবা ভাতাভোগী ২২৫০ জন।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আশাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাতা সবাই নিয়মিত পাচ্ছেন। যদি অল্প কেউ না পান, তবে বিষয়টি আমি দেখছি।’ মোবাইলে অ্যাকাউন্ট খুলে আরও সুবিধা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তাহলে ভাতা নিয়ে ভোগান্তি কেন, এ প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভাতাভোগী অনেক। আমাদের যতটুকু লোকবল আছে, তা নিয়েই আমরা চেষ্টা করছি যেন মানুষ ভোগান্তিতে না পড়েন। এরপরও যদি কেউ অভিযোগ তোলে, তবে আমার কাছে সরাসরি বলতে পারেন। কেউ যদি দীর্ঘদিন ভাতা না পান তবে কেন পাননি সেটা আমি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ