ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে পুকুর থেকে বালু তুলতে না পেরে একটি সড়ক মাটি ফেলে বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে এক ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা। এ বিষয়ে তাঁরা গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর ইউনিয়নের ক্যাম্পপাড়ায় শতাধিক পরিবারের বাস। ১৭ বছর ধরে বাসিন্দারা ওই রাস্তাটি ব্যবহার করছেন। হঠাৎ করে ওই পাড়ার পাশের ইটভাটার মালিক শামীম হোসেন পুকুরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তুলতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান। ঘটনার সত্যতা পেয়ে ইউএনও বালু তোলা বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম হোসেন ওই পাড়ার বাসিন্দাদের চলাচলের সড়কের মুখে মাটির টিলা তৈরি করে চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা।
ভুক্তভোগী আবু হোসেন ও সোহাগ হোসেন বলেন, অনেক কষ্ট করে জমি কিনে একটু থাকার ঘর করি। আমরা ১৭ বছর ধরে ওই পাড়ায় বসবাস করছি। সম্প্রতি ভাটা মালিক শামীম হোসেন পাশের পুকুরে ড্রেজার মেশিন বসান। বালু তুলতে থাকে গভীর থেকে। এতে করে আমাদের বসবাসের ঘর-বাড়ি জমি জায়গা হুমকির মুখে ছিল। পরে আমরা ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিই। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালু তোলা বন্ধ করে দেন ইউএনও। এতে ভাটা মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে ৫ জুন গভীর রাতে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। গতকাল সকালে ইউএনও বরাবর ফের অভিযোগ দিয়েছি।
রাস্তা বন্ধ করার বিষয়ে ভাটা মালিক শামীম হোসেন বলেন, ‘এর আগে রাস্তা দিয়ে ছিলাম। এখন আর রাস্তা দেব না। এ ছাড়া ভাটার মাঝখান দিয়ে রাস্তা হওয়ায় আমার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’ জমির মালিক বাবু খান বলেন, ‘১০ বছর ধরে ভাটা মালিকের কাছে জমি ইজারা দেওয়া। অনেক দিন ধরে এ রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করতেন। গত বছর রাস্তার জন্য দুই হাত করে জমিও মেপে দেওয়া হয়। এখন যদি পাশের জমির মালিকেরা জমি না ছাড়েন, তাহলে তো একা রাস্তা দিতে পারি না।’
এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমি পরিষদের সদস্য থাকাকালীন সরকারি টাকা খরচ করে মাটি ফেলে ছিলাম ওই রাস্তায়। এর আগের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যারাও ওই রাস্তায় মাটি ফেলেছেন। অনেক দিন ধরে মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছেন। জানি না, বর্তমানে কি হয়েছে। আর কেন-ই বা রাস্তা বন্ধ হলো।’ সাবদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এর আগে ওঁরা (স্থানীয়রা) ভাটা মালিকের বালু তোলা বন্ধ করেছেন ইউএনও স্যারের মাধ্যম। আমি চাচ্ছি তাঁরা এখনো তাঁর কাছে যাক। আর বিষয়টি ইউএনও স্যারের মাধ্যমে সমাধান হোক।’
এ বিষয়ে ইউএনও মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এর আগে অভিযোগ করেছিলেন বালু তোলার ঘটনা নিয়ে। তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনার পর ভাটা মালিক রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন, সেটা শুনেছি। পরের ঘটনাটি নিয়ে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন জেনেছি। হাতে পাওয়ার পর দেখে ব্যবস্থা নেব।’