উন্নত জাতের কুল চাষ করে বাজিমাত করেছেন মিষ্টু মিয়া নামের এক কৃষক। জৈন্তাপুর উপজেলার আলুবাগান এলাকায় প্রায় ছয় একর জায়গাজুড়ে বাগান করেছেন তিনি। নিজের বাড়ি নরসিংদী হলেও দীর্ঘদিন আলুবাগান এলাকায় বাস করছেন এই কৃষক। বিদেশ থেকে দেশে ফিরে কুল চাষ করে সফল তিনি। বাগান এলাকায় আসছেন ভ্রমণপ্রিয়রাও।
জানা গেছে, বন্ধুদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এবং ইউটিউব দেখে পরিকল্পনা করেন কুল চাষের। পরে আলুবাগানে এসে পতিত জমি পছন্দ করেন। প্রায় ১০ বিঘা জমি ১০ বছরের জন্য লিজ নেন। খরচ করেছেন প্রায় ১২ লাখ টাকা। প্রথমে এক হাজার ১৫৬টি চারা চুয়াডাঙ্গা থেকে আনেন। বর্তমানে তাঁর বাগানে রয়েছে নানা জাতের কুল।
চাষ শুরু হওয়ার ১০ মাসের মাথায় বাগানে ফলও ধরেছে আশাতীত। চলতি বছর মিষ্টু মিয়া বাগান থেকে ৮-১০ লাখ টাকার কুল বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। এদিকে ওপাশে ভারতের বড় বড় পাহাড়, আর এই পাশে জৈন্তা হিল রিসোর্ট। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের কাছেই তাঁর বাগান হওয়ায় প্রকৃতিপ্রেমীরা ভিড় করেন। এটি এখন স্থানীয়দের কাছে মিষ্টু মিয়ার কুল বাগান হিসেবে পরিচিত।
মিষ্টু মিয়া বলেন, ‘এর আগে এ রকম বাগান করিনি। ইউটিউব ও টেলিভিশন দেখে শখ হয় বাগান করার। তারপর এক বন্ধুর সহায়তায় জায়গাটি ঘুরে দেখি। এলাকায় এক-দুটি কুল গাছ দেখেছি, তখন মনে হলো এখানে ভালো কুল হবে। জায়গাটি চমৎকার হওয়ায় এখানে চাষে আগ্রহী হই।’
বাগানে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বিভিন্ন জাতের কুল গাছ লাগানো হয়েছে। প্রতি গাছেই কুল ঝুলে আছে। বাগানের চারপাশ জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে আরও দুজন রয়েছেন বাগান পরিচর্যা ও দেখভালের দায়িত্বে। নিবিড় পরিচর্যায় গাছগুলো বেড়ে উঠেছে গাছ।
বাগানে রয়েছে বাউকুল, আপেল কুল ও বল সুন্দরী। এসব কুল খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু, বাজারেও এর চাহিদাও ব্যাপক। এ ছাড়া বাগানের অপর একপাশে তরমুজের ফলন করছেন তিনি। তার এ রকম উদ্যোগে ইতিমধ্যেই এলাকায় সাড়া ফেলেছে বলে জানা গেছে। এলাকার অনেক যুবক বরই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
মিষ্টু মিয়া বলেন, এ পর্যন্ত জায়গা চুক্তিসহ প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই ফল বাজারজাত করতে পারব। সব মিলিয়ে এ বছর লাভবান না হলেও ৭-৮ লাখ টাকার মূলধন উঠে আসবে। তা ছাড়া সরকারিভাবে সহায়তা পেলে বাগান বড় করার ইচ্ছা আছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন বলেন, ফিল্ড সুপারভাইজারের মাধ্যমে জানতে পেরেছি নরসিংদীর এক কৃষক কুল বাগানটি করেছেন। বাগানটি কয়েকবার পরিদর্শন করে কৃষককে পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। দ্রুত বাগানটি পরিদর্শন করবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।