কুষ্টিয়ার বাজারে আবারও বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। খুচরা ও পাইকারি বাজারে প্রায় সব রকম চালে কেজিপ্রতি বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকাম থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আর মিলারদের দাবি, বেশি দামে ধান কিনলেও এখনো তাঁরা চালের দাম বাড়াননি, বরং খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে।
বাজার সূত্রে জানা গেছে, ধানের দাম বাড়ার কারণে মাসখানেক আগে চিকন চালসহ অন্যান্য চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছিল। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে কয়েক দিন ধরে খুচরা বাজারে আবারও সব ধরনের চাল কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চলতি আমন মৌসুমে এ নিয়ে দুই দফায় কুষ্টিয়ায় চালের দাম বাড়ল।
কুষ্টিয়া পৌর বাজারে দেখা যায়, মোটা আঠাশ চাল ৫২ টাকা কেজি, কাজললতা ৫৬, মিনিকেট ৬৩ ও বাসমতি ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ২ টাকা করে বেশি।
চাল বিক্রেতারা জানান, ‘বেশি দামে মোকাম থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। কদিন আগে কাজললতা চাল ৫৩ টাকায় বিক্রি করেছি, সেটা এখন ৫৬ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মোকাম থেকে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে চাল।’ তাঁরা মিলারদের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে মিলগেট থেকে বেশি দামে চাল কেনার ভাউচার দেখান।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান আজকের পত্রিকাকে জানান, ধানের দাম প্রতি মণে ৮০-৯০ টাকা বেড়েছে সত্য। তবে চালের মূল্যবৃদ্ধিতে এখনো এর প্রভাব পড়েনি।
জয়নাল আবেদীন বলেন, মিলাররাও এখন পর্যন্ত চালের দাম বাড়াননি। তবে সামনের মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে। ভবিষ্যতে চালের দাম বাড়তে পারে এমন সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরাই সিন্ডিকেট করে আগে থেকে চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন; যার প্রভাব বাজারে পড়েছে।
তবে সরকারি হস্তক্ষেপ না থাকায় চাল চক্রটি ক্রেতাদের জিম্মি করে পকেট কাটছে বলে অভিযোগ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। ক্রেতা কুদরত খান বলেন, চালের দাম কমার পরিবর্তে বাড়ছেই। ধানের দাম তো কম, কিন্তু চালের দাম বেশি। এর মধ্যে চক্রের কারসাজি রয়েছে। দায়িত্বশীলরা হয়তো দেখেও দেখে না।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া জেলার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চালের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি জেনেছি। খুব গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তবে এখনো কোনো অভিযান শুরু হয়নি।’
কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা টিম দিয়ে মনিটর করছি। তা ছাড়া মজুতের ব্যাপারটি মাথায় রেখে খাজানগর এলাকায় বিভিন্ন চালকল পরিদর্শন ও তদারকি করা হচ্ছে।’