রাজশাহী শহরে গণপরিবহন বলতে ছয় আসনের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আর দুই আসনের রিকশা। ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে গতকাল রোববার সকাল থেকে শহরে হঠাৎ করেই ছয় আসনের অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী।
যাত্রীদের কয়েকজন বলেন, দুই আসনের রিকশার চালকেরা যেকোনো গন্তব্যে ইচ্ছেমতো বা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারিতে অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। এখন অটোরিকশার চালকেরা বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য তো বটেই; অটোরিকশার প্রতিটি যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছে। তাঁরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই এখন ভাড়া বাড়ানো জরুরি। এ জন্য তাঁরা এখন আন্দোলন শুরু করেছেন। তাঁরা সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা করার দাবি করছেন।
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সকালে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন চালকেরা। অথচ শহরে অটোরিকশাচালকদের দুটি সংগঠন থাকলেও কেউ এ কর্মসূচির আহ্বান করেনি। তবে কয়েক শ চালক সকালে রেলগেট এলাকায় জড়ো হন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান নগর ভবনের সামনে। সেখানে তাঁরা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
সেখানে অটোরিকশার চালকেরা জানান, শহরে এখন লাল-সবুজ রঙের দুই রকম অটোরিকশা দিনের দুই বেলায় চলাচল করে। এক বেলা অটোরিকশা চালিয়ে বড়জোর ৭০০ টাকার ভাড়া হয়। এর মধ্যে ৫০০ টাকাই দিয়ে দিতে হয় অটোরিকশার মালিককে। ২০০ টাকায় সংসার চলে না।
দুপুরে আন্দোলনকারীদের কাছে যান সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মোমিন। তিনি বিক্ষোভকারীদের বলেন, সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত আছেন। সোমবার (আজ) চালকদের একটি প্রতিনিধিদল এসে যেন তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেন। আর অটোরিকশা চলাচল যেন স্বাভাবিক রাখা হয়। তখন অটোরিকশাচালকেরা জানান, সোমবার তাঁরা মেয়রের সঙ্গে বসবেন, তবে অটোরিকশা বন্ধই থাকবে।
অটোরিকশা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়ে। অটোরিকশা না পেয়ে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে পারেননি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ইজিবাইক-অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়ক সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, অটোরিকশাচালকদের দুটি সংগঠন আছে। তারা কেউ এ কর্মসূচির বিষয়ে জানে না। তৃতীয় একটি পক্ষ নগরবাসীকে জিম্মি করে হঠাৎ এই আন্দোলন শুরু করেছে। অন্য কেউ ভিন্ন উদ্দেশ্যে এতে ইন্ধন দিতে পারে। তারপরও সোমবার দুপুরে তাঁদের নগর ভবনে ডাকা হয়েছে। মেয়রের সঙ্গে তাঁদের সভা হবে।
তাঁদের কথা শুনে সবকিছু পর্যালোচনা করে সেখানেই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেওয়া হবে।