রাজশাহী শহরের সবখানেই এখন চোখে পড়ে ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড। বিদেশি প্রতিষ্ঠান তো বটেই, দেশীয় স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও সাইনবোর্ড লেখা হচ্ছে ইংরেজিতে। অথচ সাত বছর আগেই বাংলায় সাইনবোর্ড লেখার নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। সে নির্দেশনা এত দিনেও বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এবার ভাষার মাসে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)।
সাইনবোর্ডে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা লিখতে ব্যবসায়ীদের চিঠি দিচ্ছে রাসিক। আজ সোমবার সকাল থেকে দোকানে দোকানে চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। গতকাল রাসিকের রাজস্ব বিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাইনবোর্ডে বাংলা লেখার জন্য উচ্চ আদালতের একটা নির্দেশনা আছে। নানা কারণে এটি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এবার আমরা রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে এ কাজে হাত দিয়েছি। ব্যবসায়ীদের সাত দিন সময় দেওয়া হবে সাইনবোর্ডে বাংলা লেখার জন্য। সাত দিন পর এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’
বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান সাইনবোর্ডে বাংলা লিখতে চায় না। প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থানীয় কর্মকর্তারা বলে থাকেন, এটি তাদের ব্র্যান্ডের নাম। বিশ্বের নানা দেশেই এভাবে সাইনবোর্ড আছে। সে কারণে একই সাইনবোর্ড তাঁরা ইংরেজিতেই লিখে থাকেন। এসব প্রতিষ্ঠান কী করবে, জানতে চাইলে আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ বলেন, ‘স্থানীয় কিংবা বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইনবোর্ডে ইংরেজি রাখতে পারবে। তবে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাও লিখতে হবে। নইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের স্থানীয় ছোটখাটো প্রতিষ্ঠান কিংবা রেস্তোরাঁগুলোও এখন সাইনবোর্ড লিখছে ইংরেজিতে। শহরের সাহেববাজার গণকপাড়া মোড় থেকে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৩১১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু বাংলায় লেখা সাইনবোর্ড দেখা গেছে ৮১টি। বাংলা ও ইংরেজির দুটোই আছে এমন সাইনবোর্ড দেখা গেছে ৯৭টি। আর শুধু ইংরেজি লেখা সাইনবোর্ড দেখা গেছে ১৩৩টি।
ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকে ইংরেজি সাইনবোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এরপর রাজশাহী সিটি করপোরেশনও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলার সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলছেন, এটা একটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।