কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল থেকে রাজারখোলা পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নকাজ অর্ধেক করে ফেলে রাখা হয়েছে। সড়কটিতে পিচ ঢালাই দেওয়া হয়নি। এতে ধুলাবালিতে নাকাল অবস্থা শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলের পাশ দিয়ে গেছে সড়কটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও এ সড়ক দিয়ে আশপাশে কয়েকটি পার্কে যাতায়াত করেন দর্শনার্থীরা। সেই সঙ্গে কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ সড়কটি ব্যবহার করেন। নজরুল হল ও বঙ্গবন্ধু হলের খুবই কাছাকাছি হওয়ায় ধুলায় হলের শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন।
নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, ‘ধুলাবালির কারণে জানালা বন্ধ রাখতে হয়। খুবই বিড়ম্বনায় আছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী লিটন দাস বলেন, ‘ধুলাবালির জন্য এ রাস্তায় বের হওয়া যায় না। আমার কক্ষ রাস্তার পাশে হওয়ায় সব সময় জানালা লাগিয়ে রাখতে হয়। নয়তো লাল মাটির ধুলোয় টেবিল, চাদর লাল হয়ে যায়। আমরা শিক্ষার্থীরা এই রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগে রয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিক বলেন, ‘খুব দ্রুত এ রাস্তাটার উন্নয়নকাজ শেষ করা দরকার। ধুলোবালির কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন।’
কুমিল্লা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, সড়কের এই ধুলোবালি পরিবেশের জন্যও বিপজ্জনক। অধিদপ্তরের উপপরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, ‘উন্নয়নকাজের সময় সড়কে আমার জানা মতে পানি ছিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। যদি সেটা না করে, তবে অনুরোধ করব পানি ছিটিয়ে দেওয়ার জন্য। ধুলোবালি যদি গাছের পাতার ওপর আবরণ তৈরি করে, তবে এটা পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এ রকম পরিবেশে গাছে তেমন একটা ফলও ধরে না। অক্সিজেনেরও ঘাটতি হয়।’
প্রকল্পের ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সড়কটির জন্য ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বাজেটের এ কাজ শুরু হয় গত বছরের অক্টোবর মাসে। এখন পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি টাকার কাজ করা হয়েছে। এখন টাকার ঘাটতির কারণে কাজ করতে পারছি না। টাকা পেলে আবারও কাজ ধরতে পারব।’ তবে সড়কের ধুলোবালি যেন না উড়ে, পানি ছিটিয়ে দেবেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।’
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সঙ্গে কথা হলে তিনি সড়কটির নাম-ঠিকানা জেনে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন।