বাকবাকুম বাকবাকুম ডাকে মুখরিত এক বাড়ি। বাড়িটি সোহেল রানার। ম্যাগপাই, আউল, জালালী, গিরিবাজ, লোটন, লাক্ষা, কিং, ঘিয়ে চুন্নী, হোয়াইট কিংসহ দেশি-বিদেশি কমপক্ষে ৩০ জাতের পাঁচ শতাধিক কবুতর রয়েছে তাঁর বাড়িতে।
খামারি হয়ে ওঠার গল্পটা জানতে চাইলে সোহেল বললেন, তিন বছর আগে শখ করে চার জোড়া কবুতর এনেছিলেন বাড়িতে। কবুতর যখন একে একে ডিম দিতে শুরু করল, তখন মন ভরে গেল। প্রথমে এক জোড়া কবুতরের ছানা বিক্রি করলেন ১৮০ টাকায়, তখন ভাবলেন, কবুতর যদি বাণিজ্যিকভাবে পালন করা যায়, তাহলে বেশ লাভবান হওয়া যাবে। এভাবেই নিজ বাড়ির ছাদে শুরু করলেন খামার তৈরির কাজ।
সোহেল জানালেন, এ খামারে তিনি প্রায় দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কবুতরের ছানা বিক্রি করে এখন প্রতি মাসে তাঁর ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়। প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার কবুতর রয়েছে তাঁর। গত এক বছরে দুই লাখ টাকার কবুতর বিক্রি করেছেন এবং বিভিন্নজনকে উপহার দিয়েছেন।
সোহেল রানা চারঘাট উপজেলা সদরের আকিমুদ্দীন প্রামাণিকের ছেলে। তিনি এসএসসি পাসের পর কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন কবুতরের খামার।
সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতল বাড়ির ছাদে টিনের ছাউনির ঘর। চারপাশে তারের নেট ও চাটাই দিয়ে ঘেরা। ভেতরে বসানো হয়েছে কাঠের তৈরি পাঁচ শতাধিক কবুতরের খোপ। আকারে বড় বিদেশি কবুতরগুলোর জন্য রয়েছে আলাদা লোহার খাঁচা। নিচে দেওয়া আছে খাবার ও স্বচ্ছ পানি। সার্বক্ষণিক কবুতরগুলো দেখভালের জন্য একজন কর্মচারী রয়েছেন।
মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়া করার সময় থেকেই সোহেল রানার কবুতর পালনের শখ। সেই শখ থেকেই আজ হয়েছেন সফল খামারি। খামারের পরিধি আরও বাড়িয়ে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের কবুতর সিলেট, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোহেল রানা একজন সফল কবুতর খামারি। আমি তাঁর খামার পরিদর্শন করেছি, খুবই ভালো লেগেছে। তাঁর কবুতরের খামার দেখে আরও অনেকেই আগ্রহী হবে।’