টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের রাস্তাটি ভেঙে নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দা দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করছেন। তাঁরা দিনের বেলায় চলাচল করলেও, রাতে খুব একটা যান না।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পাইস্কা ইউনিয়নের ভাতকুড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে বৈরান নদী। একপাশে ভাতকুড়া আরেক পাশে দরিচন্দ্রবাড়ী চরপাড়া গ্রাম। বছর তিনেক আগে নদীটি পুনঃখননের কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তখন নদীর এপাড়ের মাটি কেটে চরপাড়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বর্ষাকালে নদীতে পানি আসার সঙ্গে-সঙ্গে ভাতকুড়া গ্রামের পাকা সড়কটি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যায়। এতে দিনের বেলায় লোকজন চলাচল করলেও, রাতের বেলায় তেমনটা চলাচল করেন না। রাস্তাটি দিয়ে উপজেলার পাইস্কা, মুশুদ্দি, বলভদ্র ও বীরতারা ইউনিয়নের ২০ থেকে ২৫ হাজার লোকের চলাচল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাটি পাইস্কা পুরাতন বাজার থেকে মুশুদ্দি ইউনিয়নে চলে গেছে। ভাঙা রাস্তাটিতে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার লোকজন। অটোরিকশা ভ্যান, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করলেও, এ রাস্তায় যেতে পারছে না ভারী যানবাহন। জরুরি সেবার গাড়িগুলোও চলাচল করতে পারছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আ. মজিদ মিয়া বলেন, রাস্তাটি উপজেলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনদিন রাস্তাটি ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। এর আগে রাস্তাটি ভেঙে নদীতে চলে যায়। তখন ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন সামান্য মাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করে। এ সময় অটোরিকশা ভ্যান চলাচল করতে না পারলে, স্থানীয় বাসিন্দারা ও অটোরিকশা ভ্যান চালকেরা নিজ উদ্যোগে আবার সংস্কার করেন। ভাঙা স্থানে প্রায় রাতেই ঘটে দুর্ঘটনা ঘটে। উপজেলা কর্মকর্তাদের জানানো হলেও, তাঁরা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মুসলিম উদ্দিন নামের আরেকজন বলেন, ‘আমাদের এলাকাটি কৃষি প্রধান। এ এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য উপজেলা সদরে বিক্রির জন্য নিয়ে যান। রাস্তাটি ভাঙা থাকায় অন্য রাস্তা দিয়ে উপজেলা সদরে যেতে তাঁদের চার গুণ খরচ লাগে। এলাকাবাসীর এই ভোগান্তি দূর করতে রাস্তাটি মেরামত করা ছাড়া গতি নাই। আমরা রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করি।’
রিমা খাতুন বলেন, ‘প্রতিদিন বাচ্চা নিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। ভাঙা স্থানগুলোতে যখন গাড়ি যায়, অনেক ভয় লাগে। মনে হয় গাড়িটি উল্টে নদীতে পড়ে যাবে।’
পাইস্কা ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য ফজিলা বেগম বলেন, পাউবো ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বৈরান নদী খনন করে। সে সময় নদী থেকে এক পাশের মাটি কেটে অন্য পাশে বাঁধ নির্মাণ করার ফলে রাস্তাটি ভেঙে নদীতে চলে যায়। জনদুর্ভোগ দূর করতে রাস্তাটি শিগগির মেরামত করা দরকার।
পাইস্কা ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাবুল বলেন, ‘রাস্তাটি ভাঙার কারণে জনগণ চরম অসুবিধায় আছে। আমিও এ রাস্তায় প্রতিনিয়ত যাতায়াত করি। রাস্তাটির অবস্থা অনেক ভয়াবহ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ধনবাড়ী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নদীতে বর্ষার পানি থাকায় তখন কাজ করা যায়নি। আমি রাস্তাটি দেখে এসেছি। শিগগিরই বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এরপর সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হবে।’