Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

খুলনা মহানগর: অবৈধ ১০৮ প্রতিষ্ঠানের আবাসন, জলাশয় ভরাট

হাসানুর রহমান তানজির, খুলনা

খুলনা মহানগর: অবৈধ ১০৮ প্রতিষ্ঠানের আবাসন, জলাশয় ভরাট

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বিভাগীয় শহর খুলনায় বাড়ছে শিল্প কারখানা ও আবাসন। দ্রুত ক্রমবর্ধমান এ শহরে বর্তমানে সরকারি উদ্যোগে আবাসন প্রকল্প চলমান না থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষ ঝুঁকছেন বেসরকারি ব্যবস্থায়। আর এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অনুমোদনহীন বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। নিয়মনীতি না মেনে অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে জলাশয় ও কৃষিজমি। প্রতিনিয়ত নগরে যানজট ও দূষণও বাড়ছে।

নগর-পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, অচিরেই এসব সমস্যার সমাধান করা না হলে দেশের প্রাচীন এ শিল্পনগরী শ্রী হারাবে এবং সংকটে পড়বে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের সিটি বাইপাস সড়ক, মোস্তফার মোড় থেকে কৈয়া বাজার, খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের জিরো পয়েন্ট থেকে কৈয়া বাজারের দিকে যাওয়ার সময় দুপাশে কৃষিজমিতে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ও প্রকল্প। একইভাবে বটিয়াঘাটা উপজেলার সাচিবুনিয়ার মোড় থেকে জলমা পর্যন্ত যেতেও এ রকম অসংখ্য প্রকল্প দেখা যায়। অধিকাংশ প্রকল্পে কৃষিজমির পাশাপাশি সরকারি খাল বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে। বেশির ভাগ আবাসন প্রকল্পের রাস্তা সরু এবং চলাচলের অনুপযোগী। নেই পর্যাপ্ত নালার ব্যবস্থা। কোনো কারণে ওই সব এলাকায় অগ্নিকাণ্ড হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও পৌঁছাতে পারবে না।

অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ খাসজমি এবং খাল নানা কৌশলে দখলে নিয়েছেন ওই সব আবাসন ব্যবসায়ীরা। খাল ভরাট করায় শহরের নালা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট, ২০১০ অনুযায়ী যেকোনো আবাসন প্রকল্পের জন্য নিবন্ধন এবং পরবর্তী সময়ে প্রকল্প অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলতে হলে অন্তত ১০ একর জমি, ৪০ থেকে ৬০ ফুট চওড়া প্রধান সড়ক, ২৫ ফুট চওড়া ভেতরের রাস্তা থাকতে হবে। এ ছাড়া স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার, বাজার, খেলার মাঠ, পুলিশ স্টেশন ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা থাকতে হবে।

খুলনা বাইপাস সড়কের পাশে কৃষি জমি বালু দিয়ে ভরাট করছে অনুমোদনহীন আবাসন প্রকল্পের ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাকেডিএর তথ্যমতে, খুলনা নগরে ১১টি বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠান কেডিএতে নিবন্ধিত। তবে তাদের অনুমোদিত কোনো আবাসন প্রকল্প নেই। অথচ অনুমোদনহীন ১০৮টি বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠান নগরে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে আবাসন সূত্রে জানা গেছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর খুলনা শহরে মানুষের চলাচল বেড়েছে। ফলে যানজটের পাশাপাশি যানবাহনের নির্গত ধোঁয়া থেকে দূষণ বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে শিল্প কারখানা এবং আবাসন। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। অনেক জলাধার ভরাট করায় বাড়ছে পানির সংকট।

নগর-পরিকল্পনাবিদ মাহমুদ ইউ জামান অনিক বলেন, আবাসন ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই কোনো আইনের তোয়াক্কা না করায় অপরিকল্পিতভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে খুলনা নগর। ব্যবসায়িক স্বার্থে প্রকল্পগুলোতে ঠিকভাবে রাস্তাঘাট ও নালার ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন নগরীতে নাগরিক ভোগান্তি বাড়ছে। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের আইন প্রয়োগে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন।

পরিকল্পিত নগরায়ণের বিষয়ে কেডিএর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ সদস্য শবনম সাবা বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত বেসরকারি আবাসন প্রকল্প ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করি।’

সার্বিক বিষয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘আমরা পরিকল্পিত এবং তিলোত্তমা নগরী গড়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ