রাজশাহীর চারঘাটে অনুমোদনহীন অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ছে। এসব রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান নেই। ফলে উন্মুক্ত রেলগেট দিয়ে যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
রেল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ২৫টির বেশি ট্রেন যাতায়াত করে চারঘাট উপজেলার সরদহ ও নন্দনগাছী স্টেশন দিয়ে। কিন্তু মান্ধাতার আমলের রেললাইন ও অরক্ষিত রেলগেটের কারণে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হন পথচারীরা।
গত কয়েক বছরে এসব রেলক্রসিংয়ে অন্তত ২০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
গত ১৭ জুন বিকেলে হলিদাগাছী সিগন্যাল রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে রাকিব আলী নামের এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। এর দুই সপ্তাহ আগে শলুয়া রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে মাছবাহী নছিমন গাড়ির সংঘর্ষ দুজন গুরুতর আহত হন। এর তিন দিন আগেও জোতকার্তিক এলাকায় ট্রলির সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষে একজন আহত হয়েছেন। এভাবে প্রতিনিয়তই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কোনো রেলগেট ও গেটম্যান না থাকায় এমন দুর্ঘটনায় পড়তে হয় মাঝেমধ্যেই। গত বছর ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনজন এবং এ বছর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। শিগগিরই রেলগেট দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
শলুয়া গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এসব অরক্ষিত রেলগেটে গেটম্যানের ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার হতে হচ্ছে।’
সরদহ স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলার ভেতরে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রেলপথে অনুমোদিত ৩টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২টিতে গেট ও গেটম্যান থাকলেও বাকিগুলোতে নিজস্ব সতর্কতায় চলাচল করার জন্য জনসাধারণকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পশ্চিম) আহসান উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন,‘দুর্ঘটনা আমাদেরও কষ্ট দেয়। কিন্তু এসব অবৈধ রেলক্রসিং আমরা তৈরি করিনি। স্থানীয় এলজিইডি, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ রেলক্রসিংয়ের রাস্তাগুলো তৈরি করেছে। অথচ এসব রাস্তা তৈরি করতে রেল বিভাগের অনুমতির প্রয়োজন আছে। আমরা তো সব অবৈধ রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান দিতে পারব না। তবে এসব জায়গায় সাইনবোর্ড টাঙানোসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।’