মৌলভীবাজার জেলা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা একসময়ের প্রমত্ত মনু নদ। নদটি অনেক আগেই তার জৌলুশ হারিয়েছে। নদ ভরাট হয়ে এখন চর জেগেছে। অনেক জায়গায় খালের মতো সরু হয়ে গেছে। ভরাট নদে হঠাৎ পানি কমায় আশপাশের অনেককে দেখা যায় জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। অঘোষিত মাছ ধরার উৎসবে মেতেছেন নদ তীরের মানুষ।
সরেজমিন দেখা যায় শহরের চাঁদনীঘাট ব্রিজ থেকে শুরু করে পশ্চিম বাজার এবং বড়হাট অংশে শতাধিক মানুষ বিভিন্ন রকমের জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। এসব জালের মধ্যে রয়েছে ঝাঁকি জাল, টানা জাল, উড়াল জাল এবং ফাঁদ জাল।
মনু নদে জাল ফেলে মাছ ধরেন শৌখিন শিকারি মঞ্জু মিয়া। তিনি বলেন, ‘শীতের এই সময়ের জন্য আমরা অপেক্ষা করি। নদের পানি একদম শুকিয়ে যায়, তাই খুব সহজে মাছ ধরতে পারি।’
মঞ্জু মিয়া জানান, বেশির ভাগ ছোট ছোট মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তবে মাঝেমধ্যে বড় মাছও পাওয়া যায়। চাপিলা, লাছ, ট্যাংরা, চিংড়ি, কাকিয়া, রিটা, বাছা, কাতল, বোয়াল, আইর এবং বাঘাই মাছ সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
কথা হয় শৌখিন শিকারি রহমত আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মনু নদের ওপর অংশে একটি স্লুইসগেট গেট রয়েছে। এই সময় বোরো চাষে পানির জন্য সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে মনু নদ এ সময় একদম শুকিয়ে যায়।
মৎস্যশিকারি সুমন আহমদ বলেন, ‘আগের মতো এখন তেমন মাছ পাওয়া যায় না। চার পাঁচ বছর আগেও অনেক মাছ পাওয়া যেতো।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজার জেলার সমন্বয়ক আসম সালেহ সোহেল জানান, এই নদে একসময় শুষ্ক মৌসুমেও জাহাজ চলতো। এখন হেঁটে এপার-ওপার হওয়া যায়। নদটি পরিকল্পিতভাবে গভীর করে খননের দাবি আমরা অনেকবার জানিয়েছি। একটা প্রকল্পের কাজ এসেছে। শুনেছি শুধু চর অপসারণ করা হবে। নদ-নদী বাঁচাতে হলে পরিকল্পনা প্রয়োজন।