রাজশাহীর চারঘাটের ১৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ১৩টিই অবৈধ। ব্যক্তিমালিকানাধীন এসব চিকিৎসাকেন্দ্র ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্র বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতিমধ্যে তিনটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি তিনটি সংশোধনে সাত দিন এবং সাতটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১৫ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৭২ ঘণ্টার (তিন দিন) মধ্যে সারা দেশের অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল সোমবার উপজেলার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করে সিভিল সার্জন দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি বেসরকারি ক্লিনিকের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় মিম কমিউনিটি ক্লিনিক, নীলিমা ক্লিনিক ও বিএম ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর আল শাফি ক্লিনিক, স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক ও রাজ ক্লিনিকে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ও মেশিন অকার্যকর থাকায় তা সমাধানের জন্য সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ৯টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে শুধু দ্য মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ওহি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। এ ছাড়া গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফাতেমা ডায়াগনস্টিক, প্যারাগন ডায়াগনস্টিক, রাজ ডায়াগনস্টিক, লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক, নন্দনগাছী ডায়াগনস্টিক ও গুড লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জনবল না থাকায় তা সমাধানের জন্য ১৫ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে সিভিল সার্জন দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে। দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছাড়া বাকিগুলো অবৈধভাবে চলছে। তিনটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে সংশোধনের জন্য যথাক্রমে ৭ ও ১৫ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নবায়ন করেনি, তাদের নিবন্ধন নবায়নের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। সময়সীমার মধ্যে নবায়ন না করলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
একই সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপারেশনের সময় অ্যানেসথেসিয়া ও অপারেশন থিয়েটার চালু রাখার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত চিকিৎসক থাকতে হবে। অন্যথায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিবন্ধন বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
অপর দিকে যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন নিবন্ধনের আবেদন করেছে, তাদের নিবন্ধন দেওয়ার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে হবে। নিবন্ধন পাওয়ার আগে এসব প্রতিষ্ঠান কোনোভাবেই কার্যক্রম চালাতে পারবে না বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।