Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

‘সবই বাড়ে, কমে শুধু আমগো আয়’

অর্চি হক, ঢাকা

‘সবই বাড়ে, কমে শুধু  আমগো আয়’

সোমবার, বেলা পৌনে ১১টা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের আগে সারি সারি বাস। যাত্রী তুলতে হাঁক ছাড়ছেন চালকের সহকারী। যাত্রীরাও যে যাঁর গন্তব্য অনুযায়ী উঠে পড়ছেন। তবে বাসের সিঁড়িতে পা দেওয়ার আগে অনেকেই জেনে নিচ্ছেন ভাড়াটা কত। আবার কিছু বাসে চালকের সহকারী নিজ থেকেই জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘ভাড়া কিন্তু বাড়ছে’।

রামপুরাগামী তরঙ্গ প্লাস বাসে উঠে জানা গেল, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন পর্যন্ত নতুন ভাড়া ৪৫ টাকা। রামপুরা ব্রিজ পার হলেই দিতে হবে ৬০ টাকা। চালকের সহকারী এটাও বলে দিলেন রামপুরা যেতে পথে তিনটা চেক পড়বে, আর বনশ্রী গেলে চেক চারটা। প্রতি চেকে ১৫ টাকা করে ভাড়া, তিন দিন আগেও এটা ছিল ১০ টাকা।

শংকর থেকে বাসে উঠলেন বছর পঁচিশের এক তরুণী। নাম জানালেন মার্জিয়া। বনশ্রীতে দুটি ছাত্রী পড়ান তিনি। সপ্তাহে পাঁচ দিন তাঁকে শংকর থেকে বনশ্রী যেতে হয়। বাসভাড়া বাবদ মাসে মার্জিয়ার খরচ হতো ১ হাজার ৮০০ টাকা। তিনি হিসাব করে বললেন, এখন বাসভাড়া ২ হাজার ৪০০ টাকায় গিয়ে ঠেকবে। চোখমুখে রাজ্যের হতাশা নিয়ে মার্জিয়া বললেন, ‘টিউশনিটা বোধ হয় এবার ছেড়েই দিতে হবে। কোনো চাকরিও পাচ্ছি না। কী যে করব মাথায় আসে না।’

বাস জিগাতলায় পৌঁছাতেই চেকার উঠে এলেন। মোহাম্মদপুর থেকে প্রায় এক ঘণ্টায় জিগাতলায় এসে যাত্রীদের গুনতে হলো ১৫ টাকা। দু-একজন যাত্রী এতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হলেও চালকের সহকারী মোটামুটি অনুনয়ের সুরেই তাঁদের কাছ থেকে ভাড়াটা আদায় করে নিলেন।

মুদিদোকানের কর্মচারী তাসবির উদ্দিন বললেন, ‘ত্যালের দাম বাড়ছে, বাসের ভাড়া বাড়ল। চাল, ডাল সবকিছুরই তো দাম বাড়ে। কমে শুধু আমগো আয়। গলায় দড়ি দিয়া মরতে পারলে বাঁইচা যাইতাম।’

সায়েন্স ল্যাব পৌঁছানোর আগেই বাস কানায় কানায় পূর্ণ। দাঁড়িয়ে লোকবোঝাই চলল। কোনো যাত্রীকেই এ নিয়ে কোনো কথা বলতে দেখা গেল না। দাঁড়িয়ে যাত্রী নিয়েও কেন বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, এ প্রশ্ন করতেই চালকের সহকারীর সাফ জবাব, ‘দাঁড়ানো,বসা কোনো কথা নাই, ভাড়া বাড়ছে। সবার এক ভাড়া।’

শাহবাগে দ্বিতীয় চেকে স্টুডেন্ট ভাড়া নিয়ে লেগে গেল হট্টগোল। চেকার বলে দিলেন, ‘স্টূডেন্ট কার্ড না দেখাতে পারলে ফুল ভাড়া দিতে হবে।’ আর এতেই খেপে গেলেন কয়েকজন তরুণ। তাঁদের দাবি স্টুডেন্ট কার্ড সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না তাঁরা। কিছুক্ষণ কথা-কাটাকাটির পর দুই পক্ষই গেল থেমে। দুই তরুণ ৩০ টাকার জায়গায় ২০ টাকা দিয়ে নেমে গেলেন। চালকের সহকারী তখন একা একাই গালিগালাজ করলেন কিছুক্ষণ।

বাসচালককে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমরা কর্মচারী মাত্র। ভাড়া তো মালিকে ঠিক কইরা দিছে। আমরা কিছু জানি না। হেগো লগে কথা কন গিয়া।’

দফায় দফায় যানজট আর বাস থামিয়ে রেখে যাত্রী তোলা শেষে রামপুরা পৌঁছাতে ঘড়ির কাঁটায় ১টা বেজে ৩৩ মিনিট। মোহাম্মদপুর থেকে রামপুরা আসতে লেগে গেল সোয়া ২ ঘণ্টা। বাস থেকে নেমেই দেখা গেল, মোহাম্মদপুর থেকে রামপুরা আসা স্বাধীন বাসের এক যাত্রীর সঙ্গে চালকের সহকারীর বাদানুবাদ চলছে। তিন দিন আগেও যে ভাড়া ছিল ৩০, সেখানে এখন রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা। সেটা নিয়েই অভিযোগ যাত্রীর। বাসভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানোর কথা থাকলেও কোন হিসাবে ৩০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা হলো, সেই উত্তর পাওয়া গেল না কারও কাছে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ