জয়পুরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। টাকা না দিলে পাসপোর্টের জন্য দাখিল করা কাগজের বিভিন্ন ত্রুটি বের করে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া টাকা দিলে ওই কাগজেই পাসপোর্ট পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার আব্দুর রশিদ নামের এক ব্যক্তি অনলাইনে পাসপোর্টের ফরম সঠিক নিয়মে পূরণ করে অফিসে জমা দিতে যান। তখন আব্দুর রশিদের কাগজপত্রের নানা ত্রুটি ধরেন জয়পুরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারী লিপটন। একপর্যায়ে তিনি টাকা দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। আব্দুর রশিদ ওই কর্মচারীর চাহিদার বিপরীতে দুটি পাসপোর্ট বাবদ ২ হাজার ৬০০ টাকা দেন লিপটনকে। এ ঘটনার পরপরই আব্দুর রশিদের ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং ছবি তোলার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর তাঁকে (আব্দুর রশিদকে) দ্রুত পাসপোর্ট পাইয়ে দেন লিপটন।
জয়পুরহাট পৌরসভার সবুজনগর এলাকার আব্দুল্লাহ জানান, পাসপোর্ট অফিসের আবেদন শাখায় তিন দিন গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। নানা অজুহাতে তাঁকে হয়রানি করা হয়েছে। অথচ যাঁরা তাঁদের (পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারীর) কাঙ্ক্ষিত অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে, তোলা হচ্ছে ছবি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী মোছাদ্দেকুল ইসলাম জানান, জরুরি চিকিৎসার জন্য তিনি ভারতে যাবেন। তাঁর এমআরপি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সে জন্য তিনি ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করে সেটি পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে যান। তখন থেকেই লিপটন নামের ওই অফিসের এক কর্মচারী তাঁকে নানা হয়রানি করেছেন। ইঙ্গিত করেছেন উৎকোচের। এভাবে নানা ভোগান্তির পর পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন। তিনি আরও জানান, এই অফিসের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খাঁন যোগ দেওয়ার পর থেকেই হয়রানির এই মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
ক্ষেতলাল উপজেলার হাওয়া বিবি জানান, কাগজ জমা দিতে জয়পুরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুই দিন এসেছেন তিনি। তাঁকেও আবেদনের বিভিন্ন ভুল ধরে ফিরিয়ে দেন লিপটন। অতিরিক্ত ১ হাজার ৩০০ টাকা পাসপোর্ট অফিসের লিপটনকে দেওয়ার পরপরই নির্দিষ্ট সময়েই পাসপোর্ট হাতে পান তিনি।
জানতে চাইলে লিপটন মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কে কী অভিযোগ দিয়েছে, তা আমি জানি না। আমি এটুকুই বলব, কারও কাছ থেকে আমি একটি টাকাও নিইনি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমার কার্যালয়ে অতিরিক্ত অর্থ লেনদেন হচ্ছে, এমন খবর আমার জানা নেই। তবে এ কার্যালয়ের কেউ অতিরিক্ত অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত আছেন, এ বিষয় প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।