উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে চাকরির পেছনে ছোটেননি আগৈলঝাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক যুবক। ৫ বছর আগে স্বল্প পরিসরে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ত্রিমুখী গ্রামে হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেন। এখন এর সঙ্গে কবুতর ও মাছ চাষ করে সফল তমাল জয়ধর (৩৪)।
ত্রিমুখী গ্রামের ভিশ্বদেব জয়ধরের ছেলে তমাল জয়ধর। শুরুর হাঁস-মুরগির খামারে অল্পদিনের মধ্যেই সফলতা পান। এবার এর সঙ্গে মনোযোগ দেন মাছ চাষের দিকে। বাড়ির পাশে ধানি জমিতে ধান কাটার পরে যেখানে বছরের দীর্ঘ সময় পরিত্যক্ত ফসলহীন থাকত, সেখানেই ঘের নেট দিয়ে তমাল শুরু করেন মাছ চাষ।
তমাল জয়ধর বলেন, ‘১৫ একর জমিতে মাছের ঘেরে মাছ চাষ শুরু করার পর বছর ঘুরতেই লাভের দেখা পাই। এভাবেই টানা ৪ বছরে হাঁস-মুরগি মাছ চাষে সুফল পাওয়ায় খামারের সংখ্যাও বাড়িয়েছি।’
বর্তমানে তার বড় আকারের ৩টি মুরগির খামার ১টি হাঁসের খামারের মাছের ঘের রয়েছে ২ টি। এখানেই থামেননি উদ্যমী তরুণ তমাল। প্রতিবেশী এক যুবকের কবুতর পালনে সফলতা দেখে তমালের ইচ্ছা জাগে কবুতর পালায়। এক বছর থেকে বাড়িতেই একটি শেড তৈরি করে দেশি বিদেশি প্রজাতির কয়েক জোড়া কবুতর পোষা শুরু করেন। মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই কবুতর পালনেও সফলতা ধরা দেয়।
বর্তমানে তার কবুতর শেডে কবুতর আছে কয়েক শ।
তমাল জয়ধর বলেন, ‘আমার হাঁসের খামারে শতাধিক হাঁস রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০টি ডিম পেয়ে থাকি। আমার যে মুরগির খামার রয়েছে তাতে তিন শতাধিক মুরগি রয়েছে। হাঁস-মুরগি ও কবুতরের জন্য যে খাবার প্রয়োজন তা আগের তুলনায় এখন দাম অনেক বেশি। তাই আগের থেকে লাভ কম হচ্ছে। এখন সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আমার প্রায় ষাট হাজার টাকা আয় রয়েছে। এ ছাড়া শতাধিক কবুতর পালন করছি।’
তমাল জয়ধর জানান, বাংলাদেশের জলবায়ু কবুতর পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। গ্রামে বা শহরে কবুতর পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। কবুতরকে সহজে পোষ মানানো যায় বলে গ্রামগঞ্জে বাসাবাড়িতে অনেকে কবুতর পালন করেন। বেশির ভাগ কাঠের বাক্সে পুরোনো পদ্ধতিতে কবুতর পালন করেন। তবে ইদানীং বাজারে বাচ্চা কবুতরের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উন্নত পদ্ধতিতে কবুতর পালনের আগ্রহ বাড়ছে।’
তমালের হাতে গড়া খামারগুলি দেখতে গেলে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি সহায়তা পেলে আরও খামার বাড়িয়ে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই তার এখন মূল উদ্যেশ্য।