সব প্রযোজকই চান তাঁর সিনেমাটি ঈদে মুক্তি দিতে। মুক্তির সেই দৌড়ে গত রোজার ঈদে সিনেমার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৮টি। ২০০৯ সালের পর কোনো ঈদে এটা সর্বোচ্চ সংখ্যা। আসন্ন কোরবানির ঈদেও সিনেমা মুক্তির প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সংখ্যার দিক থেকে ছাড়িয়ে যেতে পারে রোজার ঈদকেও। এ পর্যন্ত ১৩টির মতো সিনেমার কথা শোনা যাচ্ছে, যেগুলো ঈদে মুক্তি দিতে চাইছেন প্রযোজকেরা।
ঈদে মুক্তির তালিকায় রয়েছে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’। পরিচালনায় হিমেল আশরাফ। এখনো চলছে সিনেমাটির শুটিং। তবে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করে ঈদে মুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী নির্মাতা হিমেল। ইতিমধ্যে সিনেমাটির জন্য হলের মালিকেরা যোগাযোগ করেছেন বলেও জানিয়েছেন এ নির্মাতা। প্রিয়তমা সিনেমায় শাকিবের বিপরীতে রয়েছেন কলকাতার ইধিকা পাল।
চয়নিকা চৌধুরীর ‘প্রহেলিকা’ সিনেমা দিয়ে এই ঈদে দীর্ঘ ৮ বছর পর প্রেক্ষাগৃহে ফিরবেন মাহফুজ আহমেদ। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন শবনম বুবলী। এবার ঈদে অনেক সিনেমা মুক্তি পেলেও নিজের সিনেমা নিয়ে আশাবাদী চয়নিকা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদে যে সিনেমাগুলো মুক্তির মিছিলে আছে, তার সবই অসাধারণ বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা এই দারুণ সময়টাকে মিস করতে চাইনি। ভালো গল্প, ভালো অভিনয়, ভালো নির্মাণ হলে দর্শক হলে যাবে। প্রহেলিকা তেমন একটি সিনেমা। আমার চাওয়া দর্শক যেন হলে গিয়ে সব সিনেমা দেখে। আমি নিজেও প্রহেলিকা টিম নিয়ে সব সিনেমা দেখার চেষ্টা করব।’
তবে এবার ঈদ দর্শকের জন্য উপভোগ্য হবে। বেশ কিছু ভিন্ন স্বাদের সিনেমা দেখতে পারবেন তাঁরা। অন্তর্জাল নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। এমন গল্পের সিনেমা আমাদের দর্শক আগে দেখেননি।’ ছোট পর্দার আফরান নিশোর বড় পর্দায় অভিষেক হচ্ছে এবার ঈদে। রায়হান রাফীর ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার নায়ক তিনি। তাঁর বিপরীতে থাকছেন তমা মির্জা। এই সিনেমার একটি আইটেম গানে দেখা যাবে নুসরাত ফারিয়াকে।
নিরব ও বুবলীর ‘ক্যাসিনো’ সিনেমাটিও মুক্তি পাচ্ছে এবার ঈদে। পরিচালনায় সৈকত নাসির। সিনেমার গল্পে ক্যাসিনোর অন্ধকার জগৎকে তুলে আনা হয়েছে। গল্প-চিত্রনাট্য লিখেছেন আসাদ জামান।
এসব সিনেমা ছাড়াও কোরবানির ঈদে মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘মোনা’, অপু বিশ্বাস- সাইমন সাদিকের ‘লাল শাড়ি’, রোশান-বুবলীর ‘রিভেঞ্জ’, ডিপজলের ‘জিম্মি’, রোশানের ‘ওস্তাদ’, ফেরদৌস-পূর্ণিমার ‘আহারে জীবন’।
এক ঈদে এত সিনেমা মুক্তির খবর আমাদের চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য সুখবর। তবে ব্যবসায়িক অনিশ্চয়তাও আছে। এক ঈদে এত সিনেমা মুক্তির সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলেছেন একাধিক প্রযোজক ও প্রদর্শক। এ বিষয়ে প্রদর্শক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘সিনেমার প্রতিযোগিতা ভালো কিন্তু আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ভালো না। এমনিতেই দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা অনেক কম। এমন সময়ে বেশিসংখ্যক সিনেমা মুক্তি দেওয়া আত্মঘাতীর সমান। গত ঈদেও কিন্তু একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল; এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। সিনেমা ভালো হলেও পর্যাপ্ত হলে মুক্তি না পেলে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। শেষ পর্যন্ত ক্ষতিটা কিন্তু প্রযোজকদের।’