নওগাঁর নিয়ামতপুরে খোলাবাজারে সারের দাম বেশি নেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন সার কিনতে আসা কৃষকেরা। ভরা বর্ষায় তীব্র তাপপ্রবাহ চলায়, গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে জমি চাষ করতে হচ্ছে। তার ওপর বাড়তি দামে সার কিনে আবাদ করতে বেশি খরচ পড়বে বলে জানান তাঁরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলায় ১১ জন বিসিআইসি এবং ২০ জন বিএডিসি সারের ডিলার রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের রাসেল মাহমুদ নিয়ামতপুর বাজারে সার কিনতে আসলে তাঁর কাছে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি চাওয়া হয়। কিন্তু তাঁর কাছে সেটি না থাকায় তিনি খুচরা বাজারে সার কিনতে যান। পরে তিনি ১০ কেজি ইউরিয়া ১৬ টাকার পরিবর্তে ১৮ টাকায় কেনেন। এ ছাড়া পটাশ ১০ কেজি ১৫ টাকার পরিবর্তে ২৯ টাকায় এবং ১০ কেজি টিএসপি ২২ টাকার পরিবর্তে ২৯ টাকা দরে কেনেন।
এ ছাড়া উপজেলার ছাতড়া, খড়িবাড়ি, গাংগোর, নিমদীঘি বাজার ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। লাল কাপড়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য টাঙানোর কথা থাকলেও সেটি চোখে পড়েনি।
কৃষকদের অভিযোগ, বিক্রেতার সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বেশি দামে বিক্রি করছেন সার। ফলে আমন চাষে উৎপাদন খরচ বাড়বে বলে জানান তাঁরা।
নিয়ামতপুরের সার বিক্রেতা ফারুক হোসেন জানান, খুচরা সার বিক্রি করায় অনেক সময় ওজনে বেশি যাওয়ায় তাঁদের ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দাম কিছুটা বেশি নেওয়া হয়।
নিয়ামতপুর ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, সরকারি বরাদ্দের এমওপি সার এখনো নিয়ামতপুরে পৌঁছেনি। এর কারণে হয়তো বিক্রেতারা কিছুটা বেশি দাম নিচ্ছে। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমির আবদুল্লাহ মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন কৃষকের কাছ থেকে ফোনে অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই তিনি উপজেলা সদরে কয়েকটি দোকানে গিয়ে সরকার নির্ধারিত হারে সার বিক্রির আহ্বান জানান। এ ছাড়া লাল কাপড়ে সারের নির্ধারিত মূল্য তালিকা টাঙানোর বাধ্যতামূলক বলে জানান তিনি। সার বিক্রিতে কেউ অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।