উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষের ডায়রিয়া নিরসনে বড় ভূমিকা রাখছে রংপুরে উৎপাদিত খাওয়ার স্যালাইন। ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ নিউট্রিশনের (আইপিএইচএন) একটি প্রকল্পের আওতায় ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৫০ লাখ প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন উৎপাদন হয় এখানে। তবে দীর্ঘ সময়ে প্রকল্পটির আধুনিকায়নে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখনো সনাতন পদ্ধতিতেই চলছে কার্যক্রম। ফলে বিভিন্ন দুর্যোগকালে স্যালাইনের চাহিদা বাড়লেও জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চারটি পাত্রে থাকা গ্লুকোজ অ্যানহাইড্রাস, ট্রাই সোডিয়াম সাইট্রেট, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম ক্রাশিং মেশিনে গুঁড়ো হওয়ার পর তা দেওয়া হয় মিশ্রণ মেশিনে। মিশ্রণ শেষে ল্যাব টেস্টের পর হাতেই করা হয় প্যাকেট।
রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আইপিএইচএনের একটি প্রকল্পের আওতায় ১৯৮০ সালে রংপুর সদর হাসপাতালে খাওয়ার স্যালাইন উৎপাদন ও সরবরাহ প্রকল্পটি যাত্রা শুরু করে। এখানকার উৎপাদিত স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, দুটি সিটি করপোরেশন এবং বিভাগের জেলা ও উপজেলাসহ বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এ ছাড়া দুর্যোগকালে অতিরিক্ত উৎপাদন করে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হয়। তবে দীর্ঘ সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে সনাতন পদ্ধতিতে। স্থায়ী ৯ জন ও দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে ৬ জন অস্থায়ী শ্রমিক দিয়ে ৩৫ বছর ধরে উৎপাদনে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কারখানার দায়িত্বে থাকা রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. রুহুল আমিন বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন উৎপাদন হয় এখানে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলায় এ স্যালাইন সরবরাহ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত সুপারভাইজার এনামুল হক বলেন, কারখানাটি আধুনিকায়ন হলে আর হাতে প্যাকেট করতে হবে না। এতে যেমন গুণগত মান অটুট থাকবে, তেমনি প্রয়োজনে বাড়ানো যাবে উৎপাদন।
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘ভবনসহ কারখানাটিতে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উৎপাদনের ঘাটতি ও মেশিনের যাতে কোনো ত্রুটি না হয়, মান যেন বজায় থাকে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছি।’