নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই নওগাঁ-আত্রাই-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের একটি অংশ আবারও দেবে গেছে। এ নিয়ে পাশাপাশি এলাকায় দুবার সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এ অবস্থায় সড়কটির স্থায়িত্ব ও চলাচল নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
গত সোমবার সকালে হঠাৎ শাহাগোলা রেলস্টেশনের দক্ষিণে একটি সেতুর কাছে নতুন করে সড়কটি দেবে যায়। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নওগাঁ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এরপর গত মঙ্গলবার সকালে দেবে যাওয়া স্থানে বালু দিয়ে ভরাট করে সংস্কারকাজ শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মানসম্মত কাজ না করায় সড়কটি বারবার দেবে যাচ্ছে। তবে সড়কটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমি থেকে সড়কের উপরিভাগ বেশি উঁচু হওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ সমস্যার স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, ২০০১ সালে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে সড়কটির নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সে সময় নানা জটিলতায় কাজটি বন্ধ করা হয়। ২০১৮ সালে নতুন করে নওগাঁর অংশে সাড়ে ১৯ কিলোমিটার সড়ক এবং ২৫টি সেতু-কালভার্ট নির্মাণে ১৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরে টেন্ডার শেষে কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে সড়কের কাজও প্রায় শেষের দিকে।
এরই মধ্যে চলতি বছরের জুন মাসে সড়কটি আত্রাইয়ের শাহাগোলা রেলস্টেশনের অদূরে উত্তরে প্রায় ১৯০ ফুট পাকা সড়ক দুই ফুট দেবে যায়। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়। সে সময় সড়কটির ওই স্থানে মেরামত করা হয়। এরপর গত সোমবার শাহাগোলা রেলস্টেশনের দক্ষিণে সেতুর কাছে নতুন করে আবারও রাস্তাটি দেবে যায়। দেবে যাওয়া স্থানে ইতিমধ্যে সংস্কারকাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ ফুট এলাকাজুড়ে সড়কটির একপাশ দেবে গেছে। এর ফলে ছোট যান চলাচল করছে একপাশে। সেখানে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সড়কটিতে মানসম্মতভাবে কাজ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
শাহাগোলা গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন, এখনো রাস্তায় যান চলাচল পুরোপুরি শুরু হয়নি। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা দেবে যাচ্ছে। স্থায়ীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা দরকার। এ ছাড়া পুরোপুরি চলাচল শুরু হলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আলম হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘পুরো সড়কটিই অনেক গভীর খালের পাশ দিয়ে মাটি ভরাট করে অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা সড়কটি নির্মাণের সময় এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেও ঠিকাদারের লোকজন তা শোনেননি।’
এ বিষয়ে ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, ইতিমধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল সড়কটি পরিদর্শন করেছে। রাস্তা টেকসই করার জন্য তারা যেভাবে নির্দেশনা দেবে, সেভাবে কাজ করা হবে।
নওগাঁ সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, রাস্তা দেবে যাওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তিনি। বাঁধের উচ্চতা বেশি হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সমস্যাটি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।