চারঘাট প্রতিনিধি
চারঘাট উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরের নির্মাণকাজ চলছে ধীর গতিতে। নির্ধারিত সময়ের পর আরও দেড় বছর অতিবাহিত হলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ। এ অবস্থায় দীর্ঘ দিন যাবৎ নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গৌরব ও বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের ৩৬০টি ঐতিহাসিক স্থান চিহ্নিত করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ সব স্থান মর্যাদার সঙ্গে সংরক্ষণের পাশাপাশি প্রতিটিতে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি করে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর। তারই অংশ হিসেবে চারঘাট উপজেলার স্মৃতি বিজড়িত শহীদ শিবলী চত্বরে নির্মাণ করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর। নির্মাণকাজ শুরুর সময় ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সাল, কাজ শেষ করার সময়সীমা ৩১ মে ২০২০। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় বছর পার হলেও কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬০ শতাংশ। এ অবস্থায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাটি ভরাটের চাহিদা দেখিয়ে দরপত্র সংশোধনের আবেদন জানিয়েছেন। তবে সংশোধনী দরপত্র অনুমোদন পায়নি।
সরেজমিন শহীদ শিবলী চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। সেখানে কোনো শ্রমিক কিংবা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কোনো লোকজন নেই। চলমান কাজে বরাদ্দের পরিমাণ, সময়, ঠিকাদার ও নির্বাহী প্রকৌশলীর নাম সংবলিত সাইনবোর্ড থাকার নিয়ম থাকলেও সেখানে কিছুই নেই। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই সেখানে কোনো প্রকল্পের কাজ চলছে।
এদিকে, নির্ধারিত সময়ের পরও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরের কাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ইয়াসিন আলী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানানোর সরকারের মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। এটি দুঃখজনক।’
জানতে চাইলে সাব ঠিকাদার সরোয়ারুল ইসলাম লালন বলেন, ‘জায়গাটি নিচু হওয়ায় সেখানে মাটি ভরাট দরকার। বরাদ্দের জন্য আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু অনুমোদন পাইনি। এ জন্য কাজ শেষ হতে দেরি হয়েছে। কাজের মেয়াদ আরও এক বছর বর্ধিত করা হয়েছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়মিত কাজ তদারকি করা হচ্ছে। কাজে কিছুটা ধীর গতি থাকলেও বর্ধিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’