ছাত্রদের মধ্য সংঘর্ষের কারণে বন্ধ হওয়ার ৮ বছরেও চালু করা হয়নি পীরগাছা সরকারি কলেজের মোবাইদুল ইসলাম ছাত্রাবাস। কলেজে অনার্স পাঠদান শুরু এবং সরকারি হওয়ার পর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। তবু নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।
ফলে মেস, ভাড়া বাসা এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে তাঁদের অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে। এ ছাড়া কলেজে ছাত্রীনিবাস না থাকায় মেয়ে শিক্ষার্থীরাও পড়ছেন ভোগান্তিতে।
পীরগাছা সরকারি কলেজ সূত্র জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে পীরগাছা কলেজের পেছনে প্রায় ৪০ শতাংশ জমির ওপর মোবাইদুল ইসলাম ছাত্রাবাস স্থাপন করা হয়। সেই সময় ১০টি রুমে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী থাকত। ২০১৪ সালে টার্কি মাছ নিয়ে ছাত্রদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় কলেজ কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয় ছাত্রাবাসটি। এরপর ৮ বছরেও আর চালু করা হয়নি সেটি।
পীরগাছা সরকারি কলেজে ৩ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে এক হাজার ৮০০ বেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন অনার্সে। যাদের মধ্যে রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম জেলার অনেক শিক্ষার্থী এ কলেজে পড়াশোনা করছেন। যারা দুর-দুরান্ত থেকে এসে পীরগাছা কলেজে ক্লাস করছেন।
অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, আকতারী পারভীন, নাসরিন নাহার, ঝুমুর আক্তার বলেন, ‘পীরগাছা কলেজে ভর্তি হয়ে আমরা চরম বিপাকে রয়েছি। থাকার কোনো ছাত্রীনিবাস নেই। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।’
শিক্ষার্থী ফুয়াদ শাহরিয়া, আতাউর রহমান, নজরুল ইসলাম, জুয়েল মিয়া বলেন, কলেজের ছাত্রাবাস থাকলেও তা জরাজীর্ণ। তাঁরা অনেক দুর থেকে বিভিন্ন যানবাহনে এসে ক্লাস করছেন। এতে প্রতিদিন ক্লাসে আসা-যাওয়ায় জন্যই প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়।
পীরগাছা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহ ফাহমিদ হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ছাত্রাবাসের অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে। প্রাচীর নেই, বাথরুমও নষ্ট। সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই। তাই কাজ করা যাচ্ছে না।’
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, ‘বিষয়টি জানতাম না। খোঁজখবর নিয়ে ছাত্রাবাসটি কীভাবে চালু করা যায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’